করোনা কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে ধস নেমেছে তাতে চরম দরিদ্র মানুষের তালিকায় যুক্ত হবে আরও প্রায় ৪০ কোটি মানুষের নাম। এর ফলে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা শত কোটি ছাড়াবে। বিপরীতে মহামারি কালেও বিশ্বের ধনকুবেরদের সম্পদের পরিমাণ আরও বেড়েছে।
Advertisement
রয়টার্স শুক্রবার প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাতে জানিয়েছে, করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে চরম ও মারাত্মক ধস নেমেছে তাতে নতুন করে আরও ৩৯ কোটি ৫০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে। ফলে বিশ্বে মোট চরম দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়ে হবে ১১০ কোটিরও বেশি।
জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্ল্ড ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলোপমেন্ট ইকোনমিক্স রিসার্চ (ডব্লিউআইডিইআর) ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, সামগ্রিক মাথাপিছু আয় বা ভোগে ২০ শতাংশ সংকোচন হলে সে পরিস্থিতিকে সবচেয়ে খারাপ বিবেচনা করা হয়েছে।
দৈনিক ১ দশমিক ৯০ ডলার বা ১৬৩ টাকায় যারা জীবন নির্বাহ করে থাকেন বিশ্বব্যাংকের মানদণ্ড অনুযায়ী এমন মানুষদের চরম দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী বলা হয়। এছাড়া দারিদ্র্যসীমার ওপরের দিকে বসবাসকারীদের ক্ষেত্রে এ হিসাব করা হয় দৈনিক ৫ দশমিক ৫০ ডলার বা ৪৮০ টাকা ধরে।
Advertisement
গবেষণায় বলা হচ্ছে, করোনার প্রকোপ চরম দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১১২ কোটি পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া দৈনিক ৪৮০ টাকার কমে জীবন যাপন করেন এমন মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৩৭০ কোটিরও বেশি হতে পারে। ফলে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি দরিদ্রসীমার নিচে চলে যাবে।
দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ সবচেয়ে বেশি চরম দারিদ্রসীমার মধ্যে প্রবেশ করবে। একক দেশ হিসেবে এ তালিকায় প্রথমে থাকবে ভারত। এরপরই রয়েছে সাব সাহার আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলো। ফলে দারিদ্র্য হ্রাসে জাতিসংঘের কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রার অগ্রগতি আরও ২০-৩০ বছর পিছিয়ে যেতে পারে।
গবেষণা নিবন্ধটির অন্যতম লেখক অ্যান্ডি সামনার বলেন, ‘প্রাত্যহিক আয়ের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে সরকারগুলো দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে দরিদ্র মানুষদের অবস্থা সামনের দিনগুলোতে আরও খারাপ হবে। ফলে দারিদ্র্যের হার কমাতে নেওয়া এতদিনের পদক্ষেপের কোনো কার্যকারিতা থাকবে না।’
এসএ
Advertisement