বিনোদন

জাজ টিভি নিয়ে যা বললেন তথ্যমন্ত্রী

শুধুমাত্র চলচ্চিত্রভিত্তিক টেলিভিশনের দাবি জানিয়েছে দেশের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া। অবশ্য প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আব্দুল আজিজ গেল বছরই এ বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছিলন। সম্প্রতি তিনি আবারো সোচ্চার হয়েছেন চলচ্চিত্র বিষয়ক ‘জাজ টিভি’র জন্য।সর্বশেষ বৃহস্পতিবার জাজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে। সেখানে জাজ টিভির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হয়। স্ট্যাটাসে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে, সবার আগে যেটা দরকার, সেটা হল ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র। বছরে অন্তত ১২টা সুপার হিট সিনেমা হলে আবার ঘুরে দাঁড়াবে আমাদের এই চলচ্চিত্র।’সেখানে আরো বলা হয়েছে, ‘আরো একটা জিনিস দরকার, সেটা হল শুধু বাংলা সিনেমার জন্য টিভি চ্যানেল। সেখানে সারাদিন বাংলা সিনেমার গান, ট্রেলার, খবর, শিল্পী কলাকুশলীদের আড্ডা, আলোচনা, ইন্টারভিউ থাকবে। থাকবে আমাদের এফডিসির খবর। ২৪ ঘণ্টা চলবে আপকামিং সিনেমার গান, ক্লিপ, ট্রেলার। মানে- চাই ১০০% সিনেমা চ্যানেল। তাহলে দেশের সবাইকে আমরা জানাতে পারব কি সিনেমা আসছে। দর্শককে আকৃষ্ট করতে পারব হলমুখি করতে। ঠিক যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে কলকাতা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি।’পেজটি থেকে জাজ টিভির নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘জাজ এই বছর প্রথম দিকে ঘোষণা দিয়েছিল যে ২০১৬ সালে জাজ সিনেমা চ্যানেল খুলবে। আমরা সেই অনুযায়ী এতদিন কাজ করেছি। এখন জাজ সিনেমা চ্যানেল শুরু করার জন্য সম্পূর্ণ তৈরি। সরকারের অনুমোদন পেলেই শুরু হবে ১০০% বাংলাদেশ সিনেমা চ্যানেল। নাম হবে JAAZ TV. যেখানে শুধুই বাংলা চলচিত্রের গান, প্রচারণা, বাংলা চলচিত্রের খবর, শিল্পী কলাকুশলিদের সাক্ষাতকার/আড্ডা ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র দেখান হবে ২৪ ঘণ্টা। সঙ্গে থাকুন...’এই স্ট্যাটাসের পর থেকে পুরোনো বিষয়টি আবারো নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে। মতামত শোনা যাচ্ছে জাজ টিভির পক্ষে-বিপক্ষে। কেউ বলছেন চলচ্চিত্রের জন্য একটি চ্যানেল খুব প্রয়োজন। কিন্তু সেটির নিয়ন্ত্রণ ঢাকাই ছবির জন্য যাদের দীর্ঘ জীবনের শ্রম, মেধা, অর্থ বিসর্জিত হয়েছে তাদের হাতে অর্পণ করাই উত্তম হবে। এক্ষেত্রে তারা জাজ মাল্টিমিডিয়ার মতো শতভাগ ব্যবসায়িক চিন্তাধারার প্রতিষ্ঠানের উপর এ গুরু দায়িত্ব না দিতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। কারণ এতে করে চলচ্চিত্রের প্রচার নিয়ে বাণিজ্য বিড়ম্বনার সুযোগ রয়েছে বলে তাদের ধারণা।  আবার অনেকেই বলছেন ডিজিটাল ঢাকাই চলচ্চিত্রের উন্নয়নে জাজ মাল্টিমিডিয়ার অবদান অনস্বীকার্য। শতভাগ ব্যবসায়ি হলেও এদেশের চলচ্চিত্র নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভাবনা ও দর্শন বরাবরই ইতিবাচক। তাই চলচ্চিত্রের চ্যানেলের লাইসেন্স জাজ মাল্টিমিডিয়াকে দেয়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তাদের রয়েছে সেই প্রস্তুতি ও মানসিকতাও।বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের এই লগ্নে একটি বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে। সেটি হলো, গত সপ্তাহে গুলশানে চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘অন্তরঙ্গ’ ছবির অডিও অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর দৃষ্টি আকর্ষণ করে আব্দুল আজিজ চলচ্চিত্রের জন্য জাজ টিভির লাইসেন্স দাবি করেন। তখন তথ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে জাজকে চ্যানেলের জন্য অনুমোদনের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্রের জন্য টেলিভিশন- ভাবনাটা নিঃসন্দেহে চমৎকার। আমি নিজেও অনুভব করি চলচ্চিত্র শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে এদেশে একটি বিনোদনধর্মী চ্যানেলের প্রযোজন আছে। জাজ মাল্টিমিডিয়া থেকে আমাদের কাছে ইতোমধ্যেই জাজ টেলিভিশন নামে একটি চলচ্চিত্রের চ্যানেলের অনুমোদনের ব্যাপারে প্রস্তাব ও আবেদন এসেছে। কিন্তু তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে কোন প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আসলে এক্ষেত্রে কোনো বিতর্কের সুযোগ দেয়া হবে না। চ্যানেল তাকেই দেয়া হবে যার হাতে চলচ্চিত্রের চ্যানেল গেলে চলচ্চিত্রে সিন্ডিকেট হবে না, নেতিবাচক প্রচার বাণিজ্য হবে না, চলচ্চিত্রের গুণী ও সিনিয়র শিল্পীদের অবমূল্যায়ন হবে না। এবং দেশপ্রেমের বিষয়টিও বিবেচ্য হবে। সুতারাং চলচ্চিত্রের চ্যানেল হতেই পারে, তবে সেটির জন্য কাকে অনুমোদন দেয়া হবে এখনই বলা মুশকিল।’কথা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, জাজকে এ ব্যাপারে অনুমোদন দেয়া যায় কিনা সেটা তথ্য মন্ত্রণালয় খতিয়ে দেখবে। কারণ, প্রতিষ্ঠানটি এরইমধ্যে দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।এদিকে জাজের প্রধান আব্দুল আজিজ জাগো নিউজকে জানালেন, জাজ টিভির অনুমোদনের জন্য আগামী সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করা হবে। সরকার থেকে অনুমোদন পেলে আগামী বছরের জুন নাগাদ চ্যানেলটি সম্প্রচারে আসতে পারে। ‘চ্যানেলটি সম্প্রচারের জন্য সব প্রস্তুতিই রয়েছে জাজের’- বললেন আজিজ।এলএ/আরআইপি

Advertisement