ট্রাক ও ভ্যানের কতিপয় শ্রমিকের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কারণে ঠাকুরগাঁও কাজী ফার্মস গ্রুপের ফিড মিল বন্ধ করে দিয়েছে মালিকপক্ষ। তিন মাস ধরে এ মিল বন্ধ থাকায় এর সঙ্গে জড়িত তিন শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়েছেন।অনাহারে-অর্ধাহারে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মিল খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকরা শুরু করেছেন আন্দোলন। সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবে শ্রমিক সোহেল, ইব্রাহিম, ওমর, লিটন, মুন্না, নজরুলসহ অন্যরা লিখিত অভিযোগ করে বলেন, অবহেলিত ঠাকুরগাঁওয়ের সালন্দর কাজী ফার্মস গ্রুপ গড়ে তোলে ফিড মিল। এ ফার্মের উদ্যোগে কয়েক বছর ধরে কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে ভুট্টা বীজ সরবরাহ করে তাদের ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করে কাজী ফার্ম ফিড মিল কর্তৃপক্ষ।এসব ভুট্টা কৃষকদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে শত শত কৃষককে যেমন স্বাবলম্বী করা হয়েছে, তেমনি মিলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা হয়েছে ৩ শতাধিক শ্রমিক ও কর্মচারীর। সম্প্রতি ফিড মিলের মালামাল লোড-আনলোড নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকের বিরোধের সৃষ্টি হয়। ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ডভ্যান নামধারী সন্ত্রাসী শ্রমিকরা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রাখে। বাধ্য হয়ে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে তাদের দাবি মেনে নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এতে কিছুদিন মিলের কাজকর্ম ঠিকভাবে চললেও আবার শ্রমিকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেন এবং আবারও ভাড়া বৃদ্ধির জন্য কর্মকর্তাদের চাপ সৃষ্টি করেন। এবার মালিকপক্ষ তাদের অযৌক্তিক দাবি মেনে নিতে অনীহা প্রকাশ করলে ক্ষুব্ধ হয়ে ট্রাক, ট্যাংকলরি শ্রমিকরা মালামাল লোড-আনলোড বন্ধ করে দেন। ফলে মালিকপক্ষ রংপুর ও লালমনিরহাট থেকে শ্রমিক নিয়ে গিয়ে তাদের কার্যক্রম চালালে ঠাকুরগাঁয়ের ওই শ্রমিকরা মিলের কর্মকর্তাসহ কাজী ফার্মস গ্রুপের বিদেশি কনসালট্যান্টদের ওপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালায় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। সন্ত্রাসী শ্রমিক ফারুক, নুরুজ্জামান, জয়নুদ্দিন, আকরাম, ভুট্টুর হামলায় আহত হন ফিড মিল সেলস্ কর্মকর্তা কাওসার জামানসহ অন্যরা। ফলে পরিস্থিতি হয়ে উঠে উত্তপ্ত। এ নিয়ে প্রশাসনকে অভিযোগ করা হয়। সন্ত্রাসী শ্রমিকদের হুমকির কারণে বিদেশি কনসালট্যান্টরা কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করলে মালিকপক্ষ গত এপ্রিল মাসে মিলটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। সেই থেকে মিল বন্ধ রয়েছে। এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাসের সঙ্গে কথা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কাজী ফার্মের এ ফিড মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক শ্রমিক-কর্মচারী ও কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ফিড মিল বন্ধের নেপথ্যের কারণ খতিয়ে দেখে আবার চালু করার জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করার উদ্যোগ নেবেন বলে জানান তিনি।কাজী ফার্মস্ গ্রুপের ফিড মিল আঞ্চলিক প্রধান কর্মকর্তা মাহবুব আলম সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ফিড মিল চালু করার পরিবেশ না থাকার কারণে মিলটি বন্ধ রয়েছে। বিদেশি কনসালট্যান্টরা নিরাপত্তাহীনতার কারণে আসতে চাচ্ছেন না। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা পেলে মিলটি চালু করবেন বলে জানান।রবিউল এহসান রিপন/এমজেড/আরআইপি
Advertisement