মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুল, বর্তমান সময়ে বেশ আলোচিত নাম। তিনি লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি)। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য পদ লাভ করেন। একই নির্বাচনে স্ত্রী সেলিনা ইসলামও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হন। তারা দু’জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।
Advertisement
দুজনই পেশায় ব্যবসায়ী। দেশে ও বিদেশে রয়েছে নানা ব্যবসা। মানব ও অর্থপাচারের অভিযোগে পাপুল কুয়েতে গ্রেফতার হয়েছেন, রিমান্ডও হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা থেকে পাপুল ও তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামের পেশা এক হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকে আরও জানা গেছে, কুয়েতে মানব ও অর্থপাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হলেও দেশে পাপুলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। ঠিক একইভাবে সেলিনা ইসলামও রয়েছেন মামলামুক্ত।
তাদের হলফনামার সম্পদ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পাপুলের চেয়ে তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামের বার্ষিক আয় ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বেশি। পাপুলের ব্যাংক আমানত থেকে বছরে আয় ৭৩ লাখ ৪১ হাজার ১৭৪ টাকা আসে। এর বাইরে তার আর কোনো আয় নেই। অন্যদিকে তার স্ত্রীর বছরে কৃষি খাত থেকে আসে ছয় লাখ টাকা। ব্যাংক আমানত থেকে আসে এক কোটি ৪৫ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৬ টাকা।
Advertisement
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে সেলিনা ইসলাম এক কোটি ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের ল্যান্ড ক্লোজার, প্রাডো ব্যবহার করলেও পাপুলের কোনো গাড়ি নেই।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনের সময় সেলিনা ইসলামের নগদ অর্থ ছিল চার কোটি ১৫ হাজার টাকা আর পাপুলের ছিল তিন কোটি ৮৪ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬৩ টাকা।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাপুলের জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ছিল আট কোটি ৬২ লাখ ১৩ হাজার ৮২ টাকা আর তার স্ত্রীর জমা ছিল ২০ কোটি ১০ লাখ ২৫ হাজার ৩৩৪ টাকা।
পাপুলের ওয়েজ আর্নার বন্ড ২২ কোটি ৯১ লাখ ৭০ হাজার টাকার আর সেলিনা ইসলামের ওয়েজ আর্নার বন্ড ১৬ কোটি ২০ লাখ টাকার।
Advertisement
পাপুলের ৩৫ ভরি অলঙ্কার, এক লাখ ৩০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং এক লাখ ১০ হাজার টাকার আসবাবপত্র ছিল নির্বাচনের সময়। সেলিনা ইসলামের ৪০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, দেড় লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং এক লাখ ৩০ হাজার টাকার আসবাবপত্রের তথ্য উল্লেখ রয়েছে হলফনামায়।
স্থাবর সম্পদের ক্ষেত্রেও স্ত্রীর ধারেকাছে নেই পাপুল। পাঁচ কাঠা অকৃষি জমি ছাড়া পাপুলের কোনো স্থাবর সম্পদ নেই। অন্যদিকে তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামের রয়েছে অর্জনকালীন নয় কোটি ৫৪ লাখ ৩৯ হাজার ৩৬০ টাকা মূল্যের দুই হাজার ৬৩২ দশমিক ১৪ শতাংশ কৃষি জমি। সেলিনা ইসলামের আরও অর্জনকালীন এক কোটি ৫৯ লাখ ৭৪ হাজার ২৯০ টাকা মূল্যের অকৃষি জমি রয়েছে ২৫ দশমিক ৫০ কাঠা। তার মেয়ে ওয়াফা ইসলামের নামে স্থাবর সম্পদ রয়েছে অর্জনকালীন এক কোটি ২৬ লাখ ৪২ হাজার টাকা মূল্যের অ্যাপার্টমেন্ট।
বিষয়টি নিয়ে সেলিনা ইসলামকে বৃহস্পতিবার (১১ জুন) একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এমনকি সাংবাদিক পরিচয়ে মোবাইলে খুদে বার্তা পাঠানোর পরও তার কাছ থেকে কোনো জবাব মেলেনি।
পিডি/এমএআর/জেআইএম