মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এতে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল এক হাজার ১২ জনে। একই সময়ে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও তিন হাজার ১৯০ জন। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪ হাজার ৮৬৫ জনে।
Advertisement
বুধবার (১০ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ হাজার ৯৯৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৫ হাজার ৯৬৫টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো চার লাখ ৪১ হাজার ৫৬০টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ১৯০ জনের মধ্যে, যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪ হাজার ৮৬৫ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৭ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো এক হাজার ১২ জনের। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৬৩ জন। ফলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন মোট ১৫ হাজার ৯০০ জন।
নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের ৩৩ জন পুরুষ এবং চার জন নারী। ২৫ জন মারা গেছেন হাসপাতালে এবং ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বাসায়। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে সাতজন, রাজশাহী বিভাগে একজন, সিলেট বিভাগে একজন, বরিশাল বিভাগে দুজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বয়সের দিক থেকে ১১ বছরের উর্ধ্বে একজন, ত্রিশোর্ধ্ব তিনজন, চল্লিশোর্ধ্ব পাঁচজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১০ জন, ষাটোর্ধ্ব ১০ জন, সত্তরোর্ধ্ব সাতজন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী একজন মারা গেছেন।
Advertisement
গত মঙ্গলবারের (৯ জুন) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ জন মারা গেছেন, যা একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। ১৪ হাজার ৬৬৪টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ১৭১ জনের মধ্যে, যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু কমলেও শনাক্ত বেড়ে হয়েছে রেকর্ডও।
বুধবারের বুলেটিনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৫৩৮ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ১২ হাজার ৯৬৬ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৮৮ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন চার হাজার ৭২৩ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন আট হাজার ২৪৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন হাজার ১৫৬ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ নয় হাজার ১৮৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৮৩ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৫১ হাজার ৪৭২ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৭ হাজার ৭১১জন।
Advertisement
বরাবরের মতোই ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নিজের সুরক্ষা নিজের হাতে।
করোনাভাইরাসের ছোবলে এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে গোটা বিশ্ব। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা সোয়া ৭৩ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা চার লাখ ১৪ হাজার প্রায়। তবে ৩৬ লাখ ১৬ হাজার রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় করোনাভাইরাস।
পিডি/এমইউ/এইচএ/জেআইএম