যে গ্রামের মানুষের স্নেহ ও ভালোবাসায় মনোয়ারার বড় হয়ে উঠা, মৃত্যুর পর সেই চিরচেনা গ্রামেই তার লাশ প্রবেশ করতে দিলো না এলাকাবাসী। মঙ্গলবার (৯ জুন) এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার পৌর এলাকার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বগুলাগাড়ী গ্রামে। মনোয়ারা ওই গ্রামের মোজদুলের মেয়ে।
Advertisement
এ ঘটনা জেনে জলঢাকা উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুরের হস্তক্ষেপে প্রশাসনের সহায়তায় ইসলামী ফাউন্ডেশনে মাধ্যমে জানাজা শেষে মাগরিবের পূর্বে শহরের আউলিয়াখানা নদীর ধারে মনোয়ারা বেগমের লাশ দাফন করা হয়। এক সন্তানের জননী মনোয়ারা বেগম (৩০) করোনা আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
পরিবার জানায়, মনোয়ারা তার স্বামী শরিফুল ইসলামের সঙ্গে ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তার স্বামীর বাড়ি জলঢাকার কাঠালী ইউনিয়নে।
করোনার মাঝে তারা গত ৫ মে সন্তানসহ ঢাকা থেকে বাসযোগে গ্রামের বাড়ি রওনা দেয়। পথে মনোয়ারা অসুস্থ হয়ে পড়লে রংপুরে নেমে যায় এবং তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে ৬ মে তাদের নমুনা নেয়া হয়। ৮ মে রংপুর পিসিআর ল্যাবের রির্পোটে মনোয়ারার করোনা পজিটিভ আসে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মনোয়ারার।
Advertisement
মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে তার স্বামী ও সন্তান মনোয়ারার মরদেহ শহরের বগুলাগাড়ী নিয়ে আসে। কিন্তু সেখানে এসে তার গ্রামবাসীর বাধায় মনোয়ারার লাশ বাড়িতে প্রবেশ করাতে পারেনি।এ ঘটনার পর তার স্বামী স্ত্রীর লাশ নিয়ে নিজের ইউনিয়নে নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্ত সেখানেও তিনি ব্যর্থ হন। এ অবস্থায় স্ত্রীর লাশ নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন।
এ সময় তিনি সহযোগিতার জন্য জলঢাকা পৌর মেয়রকে বার বার মোবাইল করলেও তাকে ফোনে পাননি তিনি।পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুরকে বিষয়টি জানালে তার হস্তক্ষেপে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের সহায়তায় ইসলামী ফাউন্ডেশনের নিয়োগকৃত মওলানার মাধ্যমে মনোয়ারা বেগমের লাশের দাফন করা হয়।
জাহিদ/এমএএস/এমআরএম
Advertisement