৪৫ বছরের মনোয়ার সাহেব। মফস্বল থেকে ঢাকায় আসার পর থিয়েটার এবং অভিনয়ের ওপর তার ভালোবাসার মাত্রাটা বুঝতে পারেন। থিয়েটারে বেশ কিছু মঞ্চনাটকে তিনি অভিনয় করেন। ইচ্ছে ছিল এরপর সিনেমার নায়ক হবেন। কিন্তু তার সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে চাকরিতে ঢুকে যান। ছোটখাট চাকরি করেও ছেলের চাহিদা পূরণ করতে তিনি পিছপা হননি। অবসরে যাওয়ার পর তিনি ভাবেন, তার সন্তান এখন তাকে দেখবে। কিন্তু একদিন তার সন্তান তাকে বললেন, তিনি বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে থাকলে অনেক ভাল হয়। তারপর মনোয়ার সাহেব সিদ্ধান্ত নিলেন অভিনয় শুরু করবেন। কারণ, বৃদ্ধাশ্রমে থাকার চেয়ে কর্মজীবন অনেক শ্রেয়। পরিচিত পরিচালকদের কাছে ধর্না দিয়ে এক্সট্রা আর্টিস্ট হিসেবে সুযোগ মিলেছে তার।
Advertisement
অভিনয় গুণে একসময় সিরিয়ালে সুযোগ পান এক্সট্রা আর্টিস্ট হিসেবে। এক্সট্রা আর্টিস্ট হার্ট অ্যাটাকের অভিনয় করতে গিয়ে সত্যি সত্যি হার্ট অ্যাটাক করেন মনোয়ার সাহেব। নেয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয়নি। নায়কের স্বাদ পূরণ হওয়ার আগেই এক্সট্রা আর্টিস্ট তকমা নিয়েই মারা যান মনোয়ার সাহেব।
সত্য ঘটনা অবলম্বনে এমনই গল্পে মুক্তি পেয়ে ফিকশন ‘এক্সট্রা আর্টিস্ট’। নাটকটির কাহিনী ও পরিচালনা করেছেন জনাব তানভীর আহমেদ। চিত্রনাট্য করেছেন ইশতিয়াক আহমেদ রুমেল ও জনাব তানভীর আহমেদ। এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু। নন্দিনী প্রডাকশনের ব্যানারে এটি প্রযোজনা করেছেন মারিয়ম গাজী নন্দিনী।
গেল ১ জুন ধ্রুব টিভিতে প্রকাশ হয়েছে ফিকশনটি। প্রকাশের পর দর্শক মহলে বেশ সাড়া ফেলেছে এটি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশংসিত হয়েছে ‘এক্সট্রা আর্টিস্ট’।
Advertisement
ফিকশটি প্রসঙ্গে নির্মাতা জনাব তানভীর আহমেদ বলেন, ‘স্বার্থপর এই পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষই, কারো না কারো কাছে ‘এক্সট্রা’। যদি সমাজ বা রাষ্ট্রকে একটি নাট্য মঞ্চ ভাবি, দেখবো এই মঞ্চেও এমন কিছু চরিত্র আছে যাদের সমাজ বা রাষ্ট্র বলে ‘এক্সট্রা’।
একটি সিনেমা বা নাটকেও কিছু ‘এক্সট্রা’ চরিত্র থাকে, যে চরিত্র গুলো মূল চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলে। এই ‘এক্সট্রা’ চরিত্রের মানুষগুলো, দর্শকদের হাসি কান্নার অন্তরালেই হারিয়ে যায়। গল্পে এটিই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। নাটকটির ভিউ কম হলেও সাড়া পেয়েছি অনেক।
বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। নাটকটি দর্শক হৃদয়ে ঠাঁই পেয়েছে। এতে আনন্দ হচ্ছে।’
ফিকশনটির বিভিন্ন চরিত্রে আরও অভিনয় করেছেন অ্যালেন শুভ্র, সমাপ্তি মাশুক, কচি খন্দকার, মারিয়ম গাজী প্রমুখ।
Advertisement
এমএবি/পিআর