করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন বহু মানুষ, কিন্তু মৃত্যুর পর তাদের যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে শেষকৃত্য করা হচ্ছে না- এমন অভিযোগ তুলে জনস্বার্থের মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে জবাব চেয়েছেন বিচারক।
Advertisement
গত শুক্রবার বিনীত রাও নামে এক ব্যক্তি আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন। তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকদের সামনে অভিযোগ করেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা মারা যাচ্ছেন তাদের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেয়া তো দূরে থাক, শেষ শ্রদ্ধাটুকুও জানাতে দেয়া হচ্ছে না।
করোনায় আক্রান্ত ও মৃতদের সঠিক পরিসংখ্যান সরকার প্রকাশ করছে না বলেও অভিযোগ করেন ওই ব্যক্তি। এরপরেই কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে এসব অভিযোগের জবাব দিয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার যে জবাব দেবে তার অনুলিপি পাঠাতে হবে ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়া ও মামলার আবেদনকারীকেও। আগামী ১১ জুন এ মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
Advertisement
সম্প্রতি, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির দেহ শেষকৃত্য স্থানে অমানবিকভাবে ছুড়ে ফেলা হচ্ছে এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ নিয়ে দেশটিতে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।
জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরিতে (সাবেক পণ্ডিচেরি)। ইতোমধ্যেই এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ (পিপিই) পরা চার স্বাস্থ্যকর্মী অ্যাম্বুলেন্স থেকে মরদেহটি বের করে আনছেন। এরপর শেষকৃত্য স্থানে নিয়ে ছুড়ে ফেলছেন সেটি। ভিডিওতেই দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক কর্মকর্তার অনুমতি নিয়েই এভাবে মরদেহ ছুড়ে ফেলেছেন ওই চারজন।
Advertisement
অভিযোগ উঠেছে, করোনায় মৃতদের দেহ শেষকৃত্য স্থানে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশিত বিধিও মানেননি ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা। পলিথিনে না পেঁচিয়ে শুধু সাদা কাপড়ে ঢেকে মরদেহটি নিয়ে আসা হয়েছে। অথচ সংক্রমণ প্রতিরোধে করোনা রোগীরে মরদেহ পা থেকে মাথা পর্যন্ত পলিথিনের মুড়ে বহনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি, মরদেহ অত্যন্ত ধীরেসুস্থে মাটিতে রাখারও নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে তার কোনোটাই মানা হয়নি।
ইন্ডিয়া এগেনস্ট করাপশন নামে একটি সংস্থা বলছে, মরদেহের সঙ্গে এমন অমানবিক আচরণ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০০ ধারার পরিপন্থী। এক্ষেত্রে অভিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী ও তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।
সূত্র: এনডিটিভি
কেএএ/জেআইএম