আশিকুর রহমান আকাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ২০১১-১২ সেশনের ডিএমএইচ-কে ৬৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। শিক্ষাজীবনে যুক্ত ছিলেন ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে। ২০১৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন। ৩৯তম বিসিএসে (বিশেষ) স্বাস্থ্য ক্যাডার হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন তিনি।
Advertisement
ডাক্তার হিসেবে নিয়োগ পেয়েই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তরুণ এ চিকিৎসক। দায়িত্ব পালন করছেন ঢামেকের করোনা ইউনিটে।
রোববার (৭ জুন) রাতে করোনা ইউনিটে দায়িত্ব পালন শেষে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে তিনটি ছবিসহ একটি পোস্ট করেন। এর কিছুক্ষণ পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব ছবি ভাইরাল হয়ে যায় এবং বেশ প্রশংসিত হয়।
দুটি ছবিতে দেখা যায়- ডা. আশিকুর রহমান পিপিই-মাস্কসহ করোনা থেকে সুরক্ষার সব সামগ্রী পরিধান করে আছেন। আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, মাস্ক-গগলসসহ অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রী পরার কারণে সেগুলোর প্রভাব পড়েছে মুখের ওপর। মাস্ক-গগলসের চাপে মুখের ওপর ব্যাপক দাগ পড়েছে। চেহারায় এতই দাগ পড়েছে চেনার উপায় নেই পূর্বের আশিককে। যদিও বর্তমান সময়ে এই চিত্রটি দেশি-বিদেশি ডাক্তারদের জন্য খুবই নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়।
Advertisement
করোনার এ সময়ে নির্ভয়ে সাধারণ মানুষের সেবা দিয়ে যাওয়া তরুণ এ ডাক্তার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি এই সপ্তাহ থেকে ঢাকা মেডিকেলের করোনা ইউনিটে দায়িত্ব পালন করছি। সেখানে সাধারণ রোগীদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। তাদের কাছে গিয়ে তাদের অবস্থা জানছি। সেখানে বেশিরভাগ রোগীর অবস্থা বেশ ক্রিটিকাল। তারা কথা বলতে পারছেন না। তাদের কাছে গিয়ে চিকিৎসা দেই। আর যারা সুস্থ আছেন, তাদের কাছে গেলে তারা আমাদের খুব প্রশংসা করেন। ধন্যবাদ জানান। কবে ছাড়পত্র পাবেন সেটা জানতে চান। আমি তাদের আশ্বস্ত করি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সাধারণত ফেসবুকে পোস্ট দেই না। এই দুঃসময়ের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য পোস্টটি করেছি। আমাদের সব ডাক্তারের অবস্থাও একই রকম। তারা ডিউটি শেষে বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েন। দীর্ঘ ৮-৯ ঘণ্টা পিপিই পরে থাকাটা খুবই কষ্টকর। গরমে সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা। ডিউটিতে থাকাকালীন অনেক সময়ই আমাদের স্বাভাবিকভাবে নিঃশ্বাস ফেলতেও কষ্ট হয়। এই সময়টা প্রত্যেক ডাক্তারের জন্য খুবই কষ্টের।’
আশিকুর রহমান বলেন, ‘তারপরও আমরা যেহেতু ডাক্তার, মানুষের সেবা দেয়াটাই মূল ব্রত। এখানে আমাদের কী হলো না হলো সেটা কমই খেয়াল রাখি। মানুষের সেবা করাটাই আমাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।’
এফআর/এমএস
Advertisement