বিশেষ প্রতিবেদন

সমাজ বদলে দেয়ার অগ্রনায়ক লায়ন মোজাম্মেল

তিনি একজন সাদা মনের মানুষ। সমাজকে বদলে দেয়ার অগ্রনায়ক। দেড় যুগ আগে সমৃদ্ধ রূপগঞ্জ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এ সাদা মনের মানুষটি মাঠে নামেন। তার ইচ্ছা রাজধানী ঢাকার পাশের রূপগঞ্জ শিক্ষা, অর্থনীতি আর পরিবেশগত দিক দিয়ে সমৃদ্ধ হবে। এই ব্রত নিয়েই দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন আলহাজ্ব লায়ন মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া। আর তাতে সফলও হয়েছেন। এ যাবত তিনি রূপগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩১টি পাঠাগার, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা প্রতিষ্ঠা, সর্ব স্তরে বৃত্তিপ্রথা চালু, সড়ক মহাসড়কে যাত্রী ছাউনি তৈরি, মহাসড়কে আন্ডারপাস নির্মাণ, ফ্রি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, ফ্রি সেলাই প্রশিক্ষণ, ফ্রি চিকিৎসাসেবা, বৃক্ষরোপণ করে রূপগঞ্জকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি আর পরিবেশগত দিক দিয়ে এগিয়ে নিয়ে এসেছেন বহু দূর।     ‘বই পড়বো ভাল হবো’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে ১৯ বছর আগে রূপগঞ্জের যাত্রামুড়া এলাকার লায়ন হাজী মো. মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে রূপগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে লাইব্রেরি গড়ার পরিকল্পনা নেন। ১৯৯৬ সালের শুরুতে উপজেলার যাত্রামুড়া এলাকায় মারুফ-শারমীন স্মৃতি সংস্থা পাঠাগার নামে একটি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এ যাবত তিনি রূপগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওই সংস্থার নামে নিজ অর্থায়নে এ সকল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেছেন। শুধু রূপগঞ্জ নয়, লায়ন মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া সাভার ক্যান্টনমেন্ট, কেন্দ্রীয় জেলখানা, নারায়ণগঞ্জ জেলখানা, নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন, মুন্সিগঞ্জ, বরিশালের গৌরনদী এবং মানিকগঞ্জেও লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন। লাইব্রেরির পাশাপাশি তিনি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব পর্যন্ত ২৭টি পাকা যাত্রী ছাউনি ও ঢাকা- চট্রগ্রাম মহাসড়কে ৭টি এবং নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা সড়কে আরো ২টি যাত্রী ছাউনি তৈরি করেন এ সংস্থার উদ্যোগে। এছাড়া লায়ন মোজাম্মেল হক যাত্রামুড়া এলাকার জন সাধারণকে দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করতে নিজ খরচে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পাতালপথ তৈরি করেন এবং তার বাবার নামে যাত্রামুড়া এলাকায় হাজী এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। লায়ন মোজাম্মেলের গড়া প্রতিটি লাইব্রেরিই অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এ লাইব্রেরিগুলোতে দেশ বিদেশের অসংখ্য নামি দামি বই শোভা পাচ্ছে। লায়ন মোজাম্মেলের মতো এ দেশের বিত্তবান সমাজকে লাইব্রেরি গড়ায় এগিয়ে আসতে হবে। অসংখ্য পাঠকের পদচারণা মারুফ-শারমীন স্মৃতি সংস্থার পাঠাগারগুলো সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থাকে মুখরিত। এ লাইব্রেরিগুলো রূপগঞ্জবাসীর মধ্যে এতটা সাড়া ফেলবে তা লায়ন মোজাম্মেলও বুঝতে পারেননি শুরুতে। পাঠকদের আগ্রহের কারণে লাইব্রেরিগুলোতে দিন দিন বইয়ের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। প্রতিটি পাঠাগারে রয়েছে চাহিদাপত্র। পাঠকরা যে সব বই পাঠাগারে নেই, সে সব বই প্রয়োজন হলে এ পাঠক চাহিদা পত্রে লিপিবদ্ধ করলে সে অনুসারে এখানে সে সব বই সরবরাহ করা হয়ে থাকে। পাঠাগারের কর্মকর্তারা জানান, সাপ্তাহিক কোনো ছুটি ছাড়া প্রতিদিনই সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে রাত ৯ টা পর্যন্ত ২১টি লাইব্রেরির পাঠকদের মাঝে বই আদান-প্রদানের জন্য খোলা থাকে। প্রতিটি লাইব্রেরিতেই পাঠকদের বই পড়ার জন্য রয়েছে সুব্যবস্থা। রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরবর্তী রূপগঞ্জের পল্লীতে এ লাইব্রেরিগুলো গড়ে উঠেছে। লাইব্রেরির প্রধান শাখাটি রূপগঞ্জের যাত্রামুড়া এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ শাখাটি আন্তর্জাতিক মানসম্মত একটি লাইব্রেরি। এখানে দেশ বিদেশের বইয়ের দূর্লভ সংগ্রহ রয়েছে। বইয়ের পাশাপাশি আছে দৈনিক সংবাদ, দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক জনকণ্ঠের পুরানো সংখ্যা। আছে ৭১ এর যুদ্ধের সময়কার সংবাদপত্রগুলোও। আরো আছে নতুন পুরাতন দৈনিক পত্রিকার উদ্বোধনী সংখ্যাগুলো। চলতি ও বহু পুরনো ঘটনাবলীর দুর্লভ ছবির অ্যালবাম রয়েছে মারুফ-শারমীন স্মৃতি পাঠাগারের প্রধান শাখায়।এখান থেকে বই আদান-প্রদানের জন্য পাঠককে সদস্যপদ নিতে হয়। এ জন্য কোনো টাকা পয়সা দিতে হয় না পাঠকদের। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুপারিশ, চাকুরীজীবীদের জন্য স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের প্রধানের সুপারিশ এবং অন্যদের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্রের প্রয়োজন হয়। যে সকল পাঠক সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা মূল্যের বই বাড়িতে নিয়ে পড়তে চান তাদের ১০০ টাকা জামানত দিয়ে বই নিতে হয়। আর যে সকল পাঠক এক সঙ্গে ২৫০ টাকার বই নিতে চান তাদের ২০০ টাকা জামানত দিতে হয়। তারা স্বস্ব পাঠাগার থেকে পরবর্তীতে বই ফেরত দিয়ে এ জামানত ফেরত নিতে পারবে। পাঠাগারে পাঠকদের জন্য রয়েছে চা আপ্যায়নের ব্যবস্থা। পাঠাগারের নিয়মানুসারে একজন পাঠক একটি বই এক সপ্তাহের বেশি তার কাছে রাখতে পারবেন না। পাঠাগারের নিয়ম ভঙ্গকারীদের সদস্যপদ বাতিল করা হয়। একবার সদস্য পদ বাতিল হলে ওই ব্যক্তি ৩ মাসের মধ্যে সদস্য পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। তাছাড়া সদস্য পদ পেলেও তার জন্য বাড়িতে বই নেয়ার সুযোগ খর্ব করা হয়। তালিকাভুক্ত পাঠকরা যে কোনো পাঠাগার থেকে বই আদান-প্রদান করতে পারবেন। এছাড়া প্রধান পাঠাগারে প্রতি মাসের শেষ বৃহস্পতিবার গুণীজনদের নিয়ে আলোচনা সভা হয়।  সভার মধ্যমণি হন দেশ বরেণ্য লোকজন। এ সভায় সদস্য ও বিভিন্ন এলাকার আগ্রহী যুবক-যুবতীরা অংশগ্রহণ করতে পারেন। এ সকল লাইব্রেরিতে বর্তমানে জনপ্রিয় উপন্যাস, গল্পের বই, রম্য রচনা, ভ্রমণ কাহিনী, কবিতার বই, প্রবন্ধ, গবেষণামূলক বই পুস্তক, জীবনী গ্রন্থ, ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান, ইতিহাস, সমাজতত্ত্বসহ বিভিন্ন বিষয়ের লক্ষাধিক বই রয়েছে। বইয়ের পাশাপাশি রুচিশীল ও উন্নতমানের ইসলামিক গানের সিডি ও বেশ কিছু শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের সিডি এ লাইব্রেরির সংগ্রহশালা থেকে সংগ্রহ করা যাবে। বর্তমানে রূপগঞ্জে গড়ে ওঠা ২১টি লাইব্রেরির প্রায় এক লাখ বই ৭টি ইউনিয়ন ও ২ টি পৌরসভার তিনশ’ পাড়ায় ২৬ হাজার সদস্যের মাঝে আদান-প্রদান করছে। মারুফ-শারমীন স্মৃতি সংস্থার লাইব্রেরিগুলোর সম্পূর্ণ আর্থিক সহায়তা দিচ্ছেন লায়ন মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া। লাইব্রেরিগুলোর পরিচালনার খরচ ব্যয়ভার বহনও করছে এ সংস্থাটি। মারুফ-শারমীন স্মৃতি পাঠাগারের সমন্বয়কারী বাবুল হোসেন জাগো নিউজকে জানান, নতুন করে নারায়ণগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় চলতি বছরের মধ্যে আরো ১০টি শাখা তৈরি করে পাঠকদের জন্য ১ লাখ ৬০ হাজার বই দেয়া হবে। মারুফ-শারমীন স্মৃতি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা লায়ন হাজী মো. মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া বলেন, ১৯৯২ সালের শুরুতে আমি ভারতের কলকাতার নিভৃত এক পল্লীতে গিয়ে মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা একটি পাবলিক লাইব্রেরি দেখে মুগ্ধ হই। সেখান থেকেই আমার মনে লাইব্রেরি গড়ার স্বপ্ন জাগে। পরবর্তীতে আমি দেশে এসে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করি। সৃষ্টি কর্তার ইচ্ছা থাকলে এবং সরকারি অনুমোদন মিললে দেশের প্রতিটি জেলা কারাগারেও একটি করে লাইব্রেরি গড়ার ইচ্ছা রয়েছে। এ ব্যাপারে আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগে আলোচনা করেছি।       তিনি একজন অদ্ভূত গাছ প্রেমিকও। গাছ শুধু লাগান না অন্যের মাঝেও বিলান । এ যাবত তার বিনামূল্যে বিতরণ করা গাছের পরিমাণ প্রায় ২ লাখ। আগামী ৫ বছরে সে সব গাছের মূল্য দাঁড়াবে ৩০ কোটি টাকা। যা এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা পালন করবে। তিনি পেশায় একজন শিল্পপতি। জনসেবা তার নেশা। লাইব্রেরি গড়া, যাত্রী ছাউনি তৈরি করে তিনি ইতোমধ্যেই দেশবাসীর কাছে পরিচিত হয়েছেন। ২০০২ সাল থেকে তাকে আরএকটি নেশায় পেয়ে বসেছে। নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জকে তিনি সবুজায়ন করবেন এ প্রত্যয় নিয়ে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। গত ৫ বছরে তিনি বিতরণ করেছেন প্রায় ২ লাখ বিভিন্ন জাতের গাছের চারা। অনেক মাদরাসা স্কুলকে ইতোমধ্যে সবুজায়ন করেছেন। উপজেলার যাত্রামুড়া গ্রামের মোজাম্মেলের চোখে এখন সোনালি স্বপ্ন। সবুজের স্বপ্ন দেখেন মোজাম্মেল। তাই তিনি ৫ বছর আগে সবুজায়নে রূপগঞ্জ প্রকল্প হাতে নেন। এবার তিনি রূপগঞ্জ থানা চত্বরসহ অসংখ্য স্কুল, মাদরাসা সবুজায়নের কাজে হাত দিয়েছের। প্রশাসনের অনুমতি ক্রমে থানা চত্বরে লাগানো হয়েছে দেড় হাজার বিভিন্ন জাতের গাছের চারা। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করছেন গাছের চারা। যার মধ্যে শাল, সেগুন, মেহগনি, আকাশি ছাড়াও রয়েছে বেলজিয়াম রেইনট্রি বা কড়ইসহ বিভিন্ন ফলজ গাছ। এ ব্যাপারে বৃক্ষপ্রেমিক মোজাম্মেলের ভাষ্য, এ ধরনের প্রজাতির গাছের বৃদ্ধি খুব ভালো এবং যে কোনো প্রাকৃতিক পরিবেশেই এ প্রজাতির গাছ বেড়ে উঠতে পারে। শুধু চারা নয় কেউ চাইলে তাকে গাছ রোপণের খরচও দিচ্ছেন। উপজেলা জুড়ে মোজাম্মেল যে বৃক্ষ প্রকল্প গড়ে তুলেছেন তা শুধু মনোমুগ্ধকর সবুজের সমারোহই নয়, সমৃদ্ধিরও বড় ক্ষেত্র। তার দেয়া গাছের ফল আর গাছের শাখা-প্রশাখা বিক্রি করেই এখনই বছরে অনেকে উপার্জন করছেন বেশ। রূপগঞ্জ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা রাসাসের হিসাব মতে, আর মাত্র পাঁচ বছর পর মোজাম্মেলের বৃক্ষ প্রকল্পের সব গাছের মূল্য দাঁড়াবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। এখনই অনেকে তার সবুজায়নের সুফল ভোগ করতে শুরু করেছেন। উপজেলার মাঝিনা মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল মজিদ বলেন, গত ৫ বছরে লায়ন মোজাম্মেল এ মাদরাসায় যে গাছ দিয়েছেন সে সব গাছ থেকে এখন প্রতি বছর ৫০ হাজার টাকার ফল বিক্রি করা হচ্ছে। লাগানো গাছের মূল্য হয়েছে কয়েক লাখ টাকা। এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা মো. লোকমান হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, লায়ন মোজাম্মেল রূপগঞ্জ সবুজায়নের যে প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তা সত্যিই প্রসংশার দাবীদার। লায়ন মোজাম্মেলের মত অনেকরই এ ধরনের মানব কল্যাণকর কাজে এগিয়ে আসা উচিত। গাছ প্রেমিক মোজাম্মেল বলেন, আমি শুধু সবুজায়নেরই স্বপ্ন দেখি না। রূপগঞ্জের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনও চাই। তাই আমি গাছ বেছে নিয়েছি। এ প্রকল্পের আওতায় আগামী বছর রূপগঞ্জের প্রতি ব্যক্তি ১টি করে গাছ লাগানোর কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এর আওতায় সে সময় ৩ লাখ রূপগঞ্জের মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে। চলতি বছর রূপগঞ্জ থানা চত্বর, কাঞ্চন সলিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজ, মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজ, ভারত চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, মুড়াপাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, জাঙ্গীর উচ্চ বিদ্যালয়, রূপগঞ্জ কাজী হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়, তারাব মাদরাসা, দেবই আলীম মাদরাসা, মোরর্গাকুল মাদরাসা, দাউদপুর পুটিনা উচ্চ বিদ্যালয়, বরপা সড়ক, বরাব কবরস্থানসহ অসংখ্য স্কুল মাদরাসা সবুজায়নের আওতায় আনা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ সব প্রতিষ্ঠানে গাছের চারা লাগানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মুড়াপাড়া পাবিলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা শফিউদ্দিন আহম্মেদ জাগো নিউজকে বলেন, লায়ন মোজাম্মেল শুধু বিনামূল্যে গাছের চারাই বিতরণ করেন না তিনি প্রতি ক্ষেত্রেই তদারকি করেন। কাজী আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের আব্দুল লতিফ বলেন,  দেশের প্রতিটি উপজেলায় যদি একজন লায়ন মোজাম্মেলের আবির্ভাব হয় তবে সবুজে ছেঁয়ে যাবে এ দেশ। বরপা সড়ক বনায়নের কাজে হাত দিয়েছেন সাংবাদিক এস এ সোহেল। তিনি জানান, গত এক মাসে তিনি লায়ন মোজাম্মেলের সরবরাহ করা বিভিন্ন জাতের ৪ শতাধিক চারা রোপণ করেছেন। মোজাম্মেলের সবুজায়নে রূপগঞ্জ প্রকল্পের বর্ধিতকরণের কাজ চলছে এবং তিনি জানিয়েছেন বিভিন্ন প্রজাতির আরো ২৫ হাজার বিভিন্ন জাতের গাছ তিনি রোপণের পরিকল্পনা করছেন। এই বৃক্ষ প্রকল্পের মধ্যেই রয়েছে ৩টি সড়ক ও ১০টি বিদ্যালয়ের বনায়নের কাজ। তার ভাষায়, গাছ বিপদের বন্ধু, ভবিষ্যতের সিঁড়ি। তিনি বলেন, চাকরির প্রত্যাশায় বসে না থেকে দেশের যুব সমাজের কর্মক্ষমরা এভাবে বৃক্ষরোপণে ঝাঁপিয়ে পড়লে নিজের এবং দেশ-জাতির সমৃদ্ধি অর্জন করতে কতদিন লাগে। মোজাম্মেল ইতোমধ্যে অনেককে এ রকম কাজে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি নিজে দু’হাতে গাছের চারা বিলিয়েছেন। লায়ন মোজাম্মেল হকের কর্ম উদ্দীপনায় এলাকার অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে উঠেছেন। মোজাম্মেল একজন সফল বনায়নকারীই শুধু নন, বলা যায় তিনি রীতিমতো রূপগঞ্জে সবুজ বিপ্লব ঘটিয়েছেন। মোজাম্মেল বলেন, সরকারের সংশিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কামনা করেছেন, নূন্যতম পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরো বড় কিছু করা সম্ভব। একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, শ্রম, সততা এবং সঠিক পরিকল্পনাই উন্নয়নের অন্যতম মাধ্যম বা পুঁজি। সরকার যদি সমাজের এ ধরনের মানুষদের প্রতি সুদৃষ্টি দেন কিংবা অনুপ্রাণিত করেন তবে সমাজে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। একজন মোজাম্মেল আমাদের সামনে দৃষ্টান্ত হলেও অসংখ্য মোজাম্মেল সৃষ্টি করতে পারলে সমাজ-দেশ-জাতি নানাভাবে উপকৃত হবে, অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথও হবে সুগম। তবে এক্ষেত্রে সরকারের সুদুরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। এসএস/পিআর

Advertisement