জাতীয়

করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ ৪২ জনের মৃত্যুর রেকর্ড

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে আরও ৪২ জন মারা গেছেন, এটি একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট ৮৮৮ জনের মৃত্যু হলো। একই সময়ে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও দুই হাজার ৭৪৩ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৫ হাজার ৭৬৯ জনে।

Advertisement

রোববার (৭ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন।

তিনি ৫২টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২ হাজার ৮৪২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় আগের কিছু মিলিয়ে ১৩ হাজার ১৩৬টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো তিন লাখ ৯৭ হাজার ৯৮৭টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও দুই হাজার ৭৪৩ জনের দেহে। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৫ হাজার ৭৬৯ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪২ জন, যা একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো ৮৮৮ জনের। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৭৮ জন। ফলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন মোট ১৩ হাজার ৯০৩ জন।

নতুন করে যারা মারা গেছেন তাদের ৩৫ জন পুরুষ এবং সাতজন নারী। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৭ জন, চট্টগ্রাম বিভা‌গে আটজন, সিলেট, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে দুজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের ৩০ জন মারা গেছেন হাসপাতালে এবং ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বাড়িতে।

Advertisement

গত শনিবারের (৬ জুন) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জন মারা গেছেন। ১২ হাজার ৪৮৬টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও দুই হাজার ৬৩৫ জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ তো বেড়েছেই, মৃত্যুর ক্ষেত্রে হয়েছে সর্বোচ্চ রেকর্ড। এর আগে দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৪০ জনের মৃত্যুর ছিল। এ তথ্য জানানো হয় ৩১ মে’র বুলেটিনে। সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড আছে দুই হাজার ৯১১ জনের, যা গত ২ জুনের বুলেটিনে জানানো হয়। 

রোববারের বুলেটিনে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ২১ দশমিক ১৪ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৪৬৭ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন সাত হাজার ৩৯৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২৩০ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন চার হাজার ১৭৫ জন।

দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ছয় হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২।

Advertisement

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে এক হাজার ৯৭৫ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ এক হাজার ১৯৭ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৫৭৬ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৪৫ হাজার ৫০১ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৫ হাজার ৬৯৬ জন।

দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।

বরাবরের মতোই করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান ডা. নাসিমা।

করোনাভাইরাসের প্রকোপে এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে গোটা বিশ্ব। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ। মৃতের সংখ্যা চার লাখ দুই হাজারেরও বেশি। তবে প্রায় সোয়া ৩৪ লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ।

পিডি/এমইউ/এইচএ/জেআইএম