৪৭ এ দেশভাগের পর পরই বঙ্গবন্ধু অনুধাবন করেন, প্রকৃতপক্ষে বাঙালিরা তাদের স্বাধীনতা পায়নি। শুধু তাদের প্রভু বদল হয়েছে। ইংরেজদের জায়গায় এসেছে পাকিস্থানিরা। ৪৮ এর ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা করলেন ছাত্রলীগ। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার সংগ্রামে লিপ্ত হলেন বঙ্গবন্ধু। পথেপ্রান্তে ছুটে বেরিয়েছেন। বাঙালি জাতিকে মুক্ত করার নেশায় সমস্ত দুর্গম পথেই হেঁটেছেন। পূর্ব বাংলার নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন মুক্তির বার্তা। একেবারে শুরুর থেকে বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের আলাদা ভাষা থাকবে, আলাদা ইতিহাস-ঐতিহ্যে থাকবে, তার ভিত্তিতেই একটি দেশ বাংলাদেশ হবে এটাই ছিল তাঁর একমাত্র স্বপ্ন।
Advertisement
ভাষার দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে ৪৮ সালের ১১ মার্চ গ্রেফতার হন বঙ্গবন্ধু। ভাষার আন্দোলন ছিল বাঙালিদের মুক্তির প্রথম সোপান। নেতৃত্ব দিয়ে কীভাবে জাতিকে ভাষা এনে দিয়েছেন তার চূড়ান্ত দলিল তাঁর নিজের লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেছেন। অসমাপ্ত আত্মজীবনী, শেখ মুজিবুর রহমান ২১৪-২১৫ পৃষ্ঠায় বলছেন, ‘আমি এই প্রথম করাচি দেখলাম; ভাবলাম এই আমাদের রাজধানী! বাঙালিরা কয়জন তাদের রাজধানী দেখতে সুযোগ পাবে! আমরা জন্মগ্রহণ করেছি সবুজের দেশে, যেদিকে তাকানো যায় সবুজের মেলা। মরুভূমির এই পাষাণ বালু আমাদের পছন্দ হবে কেন? প্রকৃতির সাথে মানুষের মনেরও একটা সম্বন্ধ আছে। বালুর দেশের মানুষের মনও বালুর মতো উড়ে বেড়ায়। আর পলিমাটির বাংলার মানুষের মন ওই রকমই নরম, ওই রকমই সবুজ। প্রকৃতির অকৃপণ সৌন্দর্যে আমাদের জন্ম, সৌন্দর্যই আমরা ভালোবাসি।’
বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্যই ছিল মুক্তবাংলা, মুক্ত বাঙালি। তিনি পূর্ব বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের আবেগ অনুভূতি, নির্যাতন-নিপীড়নের গল্পগুলো ভালোবাসার চাদরে আবদ্ধ করে আবেগী করে তুলেছিলেন জয় বাংলায়। অস্ত্রবিহীন এই ভালোবাসার মানুষগুলোকে জয় বাংলায় এমনভাবে আবদ্ধ করেছিলেন যে যখনই ডাক দেবেন মুক্তির, তখনই লাফিয়ে পড়বে।
৫২ থেকে ৫৪ এর প্রেক্ষাপট বাঙালিদের বিজয় নিশানের ইঙ্গিত দিচ্ছিল। তা অনুধাবন করার যোগ্যতা শুধু বঙ্গবন্ধুর ছিল। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে, শিক্ষা আন্দোলন নিঃসন্দেহে ইতিহাসের বাঁক ফেরানো ঘটনা। ৫৫ সালে করাচিতে গণপরিষদে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তানের নাম বদলে ‘পূর্ব বাংলা’ করার দাবি জানান। এবং জোর গলায় বলেন বাংলা শব্দটার একটা নিজস্ব ইতিহাস আছে, আছে এর একটা ঐতিহ্য। এভাবেই তিনি পুরো বিশ্বকে অনুধাবন করাতে সক্ষম হন বাঙালি স্বাধীন হতে চায়।
Advertisement
ছয় দফা ৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু লাহোরে অনুষ্ঠিত কনভেনশনে উত্থাপন করেন। শুধু উত্থাপন করেই বসে থাকেননি, বাঙালির বাঁচার দাবির পক্ষে জনমত গঠনে জানপ্রাণ দিয়ে নেমে পড়েন বঙ্গবন্ধু। স্বাধীন বাংলাদেশের চূড়ান্ত রূপরেখা ছিল ঐতিহাসিক ছয় দফা। ব্রিটিশদের দাসত্ব আর পাকিস্তানিদের নিষ্পেষিত নির্যাতনের করাল গ্রাস থেকে জাতিকে মুক্তি দিতেই এই চূড়ান্ত পথে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তা একদিনে তো আর সম্ভব হয়নি? হেঁটেছেন বহু পথ। ব্রিটিশদের দুইশ বছরের দাসত্বের বেড়াজাল থেকে বের হওয়ার আন্দোলন। বের হলো। কিন্তু মুক্ত হতে হতে হলো না। ছয় দফায় বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার প্রকৃত রূপরেখা দিয়েছিলেন। ছয় দফাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল ভিত্তি। ছয় দফার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো এক দফা। সেটি হলো স্বাধীনতা। যা বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেছিলেন।
ছয় দফা কীভাবে জনগণের বাঁচা মরার দাবিতে পরিণত করেন তার সুনিপুণ বিবরণ ‘কারাগারের রোজনামচায়’ লেখা হয়েছে। এটি বাংলাদেশ সৃষ্টির জীবন্ত দলিল। কারাগারের রোজনামচায় জেলজীবন, পাকিস্তানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক অবস্থা ও বঙ্গবন্ধুর পারিবারিক জীবনের নানান ঘটনা ফুটে উঠেছে। তা সবই ছিল দেশ সৃষ্টির ইতিহাস। ভাষা আন্দোলনে কীভাবে নেতৃত্ব দিয়ে পূর্ব বাংলার মানুষকে একত্র করে ভাষা আদায় করে এনেছিলেন তার সুনিপুণ নিখুঁত ইতিহাস পাওয়া যাবে অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটিতে।
বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের জন্য, বাঙালি জাতির জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠা করার জন্য একেবারে শুরু থেকেই দায়িত্ব নিয়ে মনেপ্রাণে হৃদয়ে বাঙালি জাতির ভালোবাসাকে স্থান দিয়ে ধাপে ধাপে সিঁড়ি পেরিয়ে নিদারুণ কষ্ট, নির্যাতন, নিপীড়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ উপহার দেন। তার পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা কারাগারের রোজনামচা ও অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে স্থান পেয়েছে। যা করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে পরিবার থেকেও বিচ্ছিন্ন করেছিল পাকিস্তানিরা।
কারাগারের রোজনামচায় বঙ্গবন্ধু বলছেন, ‘নিষ্ঠুর কর্মচারীরা বোঝে না যে স্ত্রীর সাথে দেখা হলে আর কিছু না হউক একটা চুমু দিতে অনেকেরই ইচ্ছ হয়, কিন্তু উপায় কী? আমরা তো পশ্চিমা সভ্যতায় মানুষ হই নাই। তারা তো চুমুটাকে দোষণীয় মনে করে না। স্ত্রী সাথে স্বামীর অনেক কথা থাকে কিন্তু বলার উপায় নাই।’
Advertisement
ছয় দফা প্রচারণায় গ্রেফতারের পূর্বে ৬৬ সালের শুরুর দিকে মাত্র ৪৫ দিনে ৩২টি জনসভায় ভাষণ দেন। ৭ জুনের হরতাল পালিত হবেই। মূলত ছয় দফা পাকিস্তানকে খণ্ডবিখণ্ড করে দিয়েছিল। অতিবিপ্লবী বামপন্থীরা কখনো ছয় দফার পক্ষে ছিল না। বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘জনগণ জানে এই দলটির কিছু সংখ্যক নেতা কীভাবে কৌশলে আইয়ুব সরকারের অপকর্মকে সমর্থন করছে। আবার নিজেদের বিরোধী দল হিসেবে দাবি করে এরা জনগণকে ধোঁকা দিতে চেষ্টা করছে। এরা নিজেদের চীনপন্থী বলেও থাকেন। একজন একদেশের নাগরিক কেমন করে অন্য দেশপন্থী, প্রগতিবাদী হয়?’
৬৬ সালের ৫ জুন বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগ কর্মীদের গ্রেফতার করে চলেছে।...। দমননীতি সমানে চালাইয়া যেতেছে সরকার।...। আওয়ামী লীগ কর্মীরা যথেষ্ট নির্যাতন ভোগ করেছে। ছয় দফা দাবি যখন তারা দেশের কাছে পেশ করেছে তখনই প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে যে তাদের দুঃখ কষ্ট ভোগ করতে হবে। এটা ক্ষমতা দখলের সংগ্রাম নয়, জনগণকে শোষণের হাত থেকে বাঁচাবার জন্য সংগ্রাম। যথেষ্ট নির্যাতনের পরেও আওয়ামী লীগ কর্মীরা দেশের আইন শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে নাই।..। আমার বিশ্বাস আছে আওয়ামী লীগের ও ছাত্রলীগের নিঃস্বার্থ নেতাকর্মীরা তাদের সাথে আছে। কিছু সংখ্যক শ্রমিক নেতা যারা সত্যই শ্রমিকদের জন্য আন্দোলন করে তারাও নিশ্চয়ই সক্রিয় সমর্থন দেবে। এত গ্রেপ্তার করেও দমাইয়া দিতে পারে নাই। ৭ ই জুন হরতালের জন্য এরা পথসভা ও মিছিল বের করে চলেছে। সত্যই এতটা আশা আমি করতে পারি নাই।...। মাথার ভেতর শুধু ৭ই জুনের চিন্তা। কী হবে! তবে জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। জনমত আমার জানা আছ।’
আত্মবিশ্বাসী বঙ্গবন্ধু বলছেন, ছয় দফা এখন জনগণের সম্পদে পরিণত হয়েছে। সুতরাং জয় আমাদের হবেই, হরতাল পালিত হবে। শত বৎসরের নির্যাতিত-নিপীড়িত জাতিকে মুক্ত করতেই হবে।
৬ জুন বঙ্গবন্ধু লিখছেন, ‘আগামীকাল ধর্মঘট। পূর্ব বাংলার জনগণকে আমি জানি, হরতাল তারা করবে। রাজবন্দিদের মুক্তি তারা চাইবে। ছয় দফা সমর্থন করবে। তবে মোনায়েম খান সাহেব যেভাবে উস্কানি দিতেছেন তাতে গোলমাল বাঁধাবার চেষ্টা যে তিনি করছেন। এটা বুঝতে পারছি। জনসমর্থন যে তার সরকারের নাই তা তিনি বুঝেও, বোঝেন না।...। শত অত্যাচার ও নির্যাতনেও কর্মীরা ভেঙে পড়েন নাই। আন্দোলন চালাইয়া চলেছে। নিশ্চয়ই আদায় হবে দাবি।...। আমার নিজের উপর বিশ্বাস আছে, সহ্য করার শক্তি খোদা আমাকে দিয়েছেন। ভাবি শুধু আমার সহকর্মীদের কথা।...। ত্যাগ বৃথা যাবে না, যায় নাই কোনোদিন। নিজে ভোগ নাও করতে পারি, দেখে যেতে নাও পারি, তবে ভবিষ্যৎ বংশধররা আজাদী ভোগ করতে পারবে।..। এদেশের লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি মা-বোনের দোয়া আমাদের উপর। জয়ী আমরা হবই। ত্যাগের মাধ্যমেই আদর্শের জয় হয়।’
জনগণের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস ছিল সীমাহীন। জনগণের জন্য সারাজীবন ত্যাগ আর আদর্শের রাজনীতি করেছেন। ত্যাগের মাধ্যমেই আদর্শের জয় হয় তিনি বিশ্বাস করতেন। ছয় দফার দাবিতে ৭ জুন বাঙালির ঐক্যবদ্ধ নজিরবিহীন হরতাল পালন।
বঙ্গবন্ধু ৬৬ সালের ৭ জুন লিখছেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠলাম। কী হয় আজ? আব্দুল মোনায়েম খান যেভাবে কথা বলছেন তাতে মনে হয় কিছু একটা ঘটবে আজ। কারাগারের দুর্ভেদ্য প্রাচীর ভেদ করে খবর আসলো দোকান-পাট, গাড়ি, বাস, রিক্সা সব বন্ধ। শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল চলছে। এই সংগ্রাম একলা আওয়ামী লীগই চালাইতেছে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করেছে। ছয় দফা সমর্থন করে আর মুক্তি চায়, বাঁচতে চায়, খেতে চায়, ব্যক্তিস্বাধীনতা চায়। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি, কৃষকের বাঁচবার দাবি তারা চায় এর প্রমাণ এই হরতালের মধ্যে হয়েই গেল। তবে হরতাল যে সাফল্যজনকভাবে পালন করা হয়েছে সে কথা সকলেই বলছে। এমন হরতাল নাকি কোনোদিন হয় নাই,..। মনে শক্তি ফিরে এল এবং আমি দিব্যি চোখে দেখতে পেলাম 'জয় আমাদের অবধারিত। কোনো শক্তি আর দমাতে পারবে না। দৈনিক আজাদ পত্রিকার সংবাদ পরিবেশন ভালোই করেছে, আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আজ প্রদেশে হরতাল। হরতালকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য আওয়ামী লীগের একক প্রচেষ্টা।’
৮ জুন বঙ্গবন্ধু লিখছেন, ‘এই দেশের মানুষ তার ন্যায্য অধিকার আদায় করবার জন্য যখন জীবন দিতে শিখেছে তখন জয় হবেই, কেবলমাত্র সময় সাপেক্ষ। শ্রমিকরা কারখানা থেকে বেরিয়ে এসেছে। কৃষকরা কাজ বন্ধ করেছে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে। ছাত্ররা স্কুল-কলেজ ছেড়েছে। এত প্রতিবাদ আর কোনোদিন কি পাকিস্তানে হয়েছে? ছয় দফা যে পূর্ব বাংলার জনগণের প্রাণের দাবি পশ্চিমা উপনিবেশবাদী ও সাম্রাজ্যবাদের দালাল পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকশ্রেণি যে আর পূর্ব বাংলার নির্যাতিত গরিব জনগণকে শোষণ বেশিদিন করতে পারবে না সে কথা আমি এবারে জেলে এসে বুঝতে পেরেছি। যে রক্ত আজ আমার দেশের ভাইদের বুক থেকে বেরিয়ে ঢাকার পিচঢালা কাল রাস্তা লাল করল, সে রক্ত বৃথা যেতে পারে না বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য যেভাবে দেশের ছাত্র জনসাধারণ জীবন দিয়েছিল তার বিনিময় বাংলা পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা।’
‘ছয় দফা দমনের নামে সরকার আতঙ্ক ছড়ায়। আওয়ামী লীগের মধ্যে দ্বন্দ্ব, কোন্দল ও ভাঙনের ষড়যন্ত্র করার কারণে বঙ্গবন্ধু সরকারের উদ্দেশ্য বলেন, ছয় দফার জন্য জেলে এসেছি, বের হয়ে ৬ দফার আন্দোলনই করব। যারা রক্ত দিয়েছে ছয় দফার জন্য তাদের রক্তের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করতে আমি পারব না।।’
অদম্য মহানায়ককে চিরস্থায়ীভাবে দমাতে ৬৮ সালের ৩ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার দায়ের করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। অভ্যুত্থান হলো বাংলায়। রূপ নিল গণঅভ্যুত্থানে। ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের পর জাতি ধীরে ধীরে এগুতে থাকে স্বাধীনতার দিকে এক মহান নেতার নেতৃত্বে। লক্ষ লক্ষ মানুষের ভালোবাসায় ২৩ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানকে উপাধি দেয়া হয় ‘বঙ্গবন্ধু’। ৫ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু পূর্ববাংলার নামকরণ করেন ‘বাংলাদেশ। এ যেন যোগ্য পিতার কণ্ঠে অনাগত সন্তানের নাম।
ছয় দফা পূর্ব বাংলার জনগণের মধ্যে মহাজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। মানুষ বাঁচা-মরার লড়াই বুঝতে সক্ষম হয়। ছয় দফা বাঙালির মুক্তি, শোষণ বঞ্চনার অবসানের সনদ। ছয় দফাই ছিল স্বাধীনতার মূল ভিত্তি। দৃঢ় কণ্ঠে উচ্চারণ করেছেন বঙ্গবন্ধু, ছয় দফার সাথে কোনো আপস নেই। বাঙালিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র যতই শক্তিশালী হয়েছে ছয় দফা ততই পরিপক্ক করেছেন বঙ্গবন্ধু। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের সকল ষড়যন্ত্র রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ছয় দফাকে বঙ্গবন্ধু এক দফায় রূপান্তরিত করে স্বাধীনতার ডাক দেন। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। বাংলাদেশ সৃষ্টির মূলমন্ত্র ছিল ছয় দফা।
বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী এবং কারাগারের রোজনামচা প্রকাশের পূর্বে অন্ধকারেই ছিল বাঙালির পরিশুদ্ধ ইতিহাস।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, গণিত বিভাগ; সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও পরিচালক, বঙ্গবন্ধু চর্চাকেন্দ্র বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর। শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক, নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগ।
এইচআর/বিএ/জেআইএম