গত কয়েক মাস ধরে ব্রাজিলে হু হু করে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। ইতোমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যায় বিশ্বের দ্বিতীয় এবং মৃত্যুর হিসাবে তৃতীয় অবস্থানে চলে এসেছে তারা। তবে এটি সরকারি হিসাবে মাত্র, দেশটিতে আক্রান্ত-মৃতের প্রকৃত সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি বলে মত বিশ্লেষকদের। আর এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারোর খামখেয়ালি সিদ্ধান্তকেই দায়ী করছেন সমালোচকরা।
Advertisement
এবার সমালোচনার আগুনে অনেকটা ছাইচাপা দিতেই করোনা সংক্রমণের তথ্য লুকিয়ে ফেলেছে ব্রাজিল সরকার। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে মোট আক্রান্ত ও অঞ্চলভিত্তিক সংক্রমণের তথ্যগুলো।
এখন থেকে শুধু দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাই প্রকাশ করা হবে, আর কোনও বিস্তারিত তথ্য দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে ব্রাজিলিয়ান কর্তৃপক্ষ।
প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো এক টুইটে বলেছেন, ক্রমবর্ধমান তথ্য থেকে কোনও দেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি বোঝা যায় না। তবে কেন সংক্রমণের তথ্য সরিয়ে নেয়া হলো সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
Advertisement
এর আগে, গত শুক্রবার লকডাউন তোলার বিষয়ে সমালোচনা করায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন বোলসোনারো।
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থাটির মতে, বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারির নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে লাতিন আমেরিকা। এর মধ্যে অবশ্যই সবচেয়ে বেশি ভুগছে ব্রাজিল। দেশটিতে ইতোমধ্যেই ছয় লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, মৃতের সংখ্যাতেও ইতালিকে ছাড়িয়ে গেছে তারা।
শুধু ব্রাজিলেই নয়, মেক্সিকো, পেরু, কলম্বিয়া, চিলি, বলিভিয়াতেও ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ। ইতোমধ্যেই লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে সর্বমোট আক্রান্তের সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়েছে।
এ অঞ্চলে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি সম্পর্কে জানতে চাইলে সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস লকডাউন তোলার ক্ষেত্রে ছয়টি জরুরি মানদণ্ডের কথা উল্লেখ করেন। এর মধ্যে একটি ছিল- সংক্রমণের হার কমে আসা। সংক্রমণ কমার আগে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া বিপজ্জনক বলে জানিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি লাতিন আমেরিকায় সংক্রমণ বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এ কর্মকর্তা।
Advertisement
শুক্রবার ডব্লিউএইচও’র এ উদ্বেগের বিষয়ে জানতে চাইলে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট। এসময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘পক্ষপাতদুষ্ট রাজনৈতিক সংস্থা’র মতো আচরণ বন্ধ না করলে তা থেকে বেরিয়ে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন বোলসোনারো।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স
কেএএ/পিআর