'ব্লকচেইন' প্রযুক্তি হলো ডেটা সংরক্ষণ করার একটি নিরাপদ ও উন্মুক্ত পদ্ধতি। শনিবার এর ওপর অনলাইনে ৬০ জনের বেশি মানুষকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
Advertisement
এই প্রশিক্ষণ আয়োজন করে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অধীনে “উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প”। প্রকল্পের “এডুকেশন ফর ন্যাশন” এর আওতায় এই প্রশিক্ষণটি ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে হয়।
প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম। তিনি আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন অর্জন ও ব্লকচেইন প্রযুক্তি সম্পর্কে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।
সচিব বলেন, ব্লকচেইন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি, যার সঠিক ব্যবহার করা প্রয়োজন। ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজির ওপর আমাদের তরুণদের মধ্যে যথেষ্ট আগ্রহ আছে। ফ্রন্টিয়ার প্রযুক্তি ব্যবহারে আইসিটি বিভাগ ‘সম্মুখ ভাগের সৈনিক’ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন প্রশিক্ষিত জনবল। ব্লকচেইন প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের সার্বিক ব্যবস্থাপনাকে আরও উন্নত করার পাশাপাশি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলেও অভিমত প্রকাশ করেন তিনি।
Advertisement
বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, যে করোনার কারণে আমরা এখন একটি কঠিন এবং অবর্ণনীয় সময়ে আছি। এই মহামারির সময়ে আমাদের ট্রান্সপারেন্সি ও অ্যাকাউন্টেবিলিটি নিশ্চিত করতে হবে। এই ব্লকচেইন প্রযুক্তি ট্রান্সপারেন্সি নিশ্চিত করতে পারে। তাই এর উপযুক্ত ব্যবহার করা প্রয়োজন। শিক্ষার ও গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। এ সময়ে সবাইকে মনোবল শক্ত রাখতে হবে। আমাদের সবাইকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, গবেষণা এবং আইসিটি স্কিলের ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে। আমরা সবাই মিলে দেশকে অবশ্যই একটি সম্ভাবনার দিকে নিয়ে যাব।
বিসিসির নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব এই আয়োজনকে সফল করতে যারা সাহায্য করেছেন তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। বিশেষ অতিথি হিসেবে তিনি বলেন, আমরা একটি উদ্ভাবনী পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই, যার মাধ্যমে একটি অন্ট্রপ্রিনিউরশিপ কালচার তৈরি করা সম্ভব হবে। পৃথিবীতে ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজির যে প্রচলন চলছে সেই সম্পর্কে আমরা সবাইকে পরিচিত এবং ধারণা দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখব।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সৈয়দ মজিবুল হক। তিনি বলেন. ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি ছাড়া আগামীতে বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা কঠিন হবে। যদি আমরা ডিজিটাল মার্কেটিং বলি অথবা অন্য কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করতে চাই তবে আমাদের অবশ্যই ফ্রন্টিয়ার টেকলোজির সহোযোগিতা নিতে হবে। অর্থাৎ ব্লকচেইন প্রযুক্তি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় মাধ্যম। আমাদের বর্তমান প্রজন্মকে ফ্রন্টিয়ার টেকলোজি না শেখাতে পারলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সময়কালে আমাদের পিছিয়ে পড়তে হবে।
দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণটিতে রিসোর্স পারসন হিসেবে সংযুক্ত হয়েছিলেন- জাপানের হায়োগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব সিমুলেশন স্টাডিসের রিসার্স ফেলো রুবাইয়াত ইসলাম, দি কম্পিউটার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ব্লকচেইন বিশেষজ্ঞ খন্দকার আতিক-ই-রাব্বানী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) সহযোগী অধ্যাপক ড. বি.এম. মইনুল হোসেন।
Advertisement
প্রশিক্ষকরা তাদের অভিজ্ঞতা প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে শেয়ার করেন। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বেসিকস্ অ্যান্ড ইভোলিউশন অব ব্লকচেইন, সাপ্লাইচেইন ব্যবস্থাপনায় ব্লকচেইন এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তির ভাবনা ও বিস্তারিত প্রশিক্ষণার্থীদের নিকট উপস্থাপন করা হয়। এই প্রশিক্ষণে বরিশাল অঞ্চলের প্রায় ৬০ জনের অধিক প্রশিক্ষণার্থী অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমের মাধ্যমে সংযুক্ত হন। তাদের সনদপত্র প্রদান করা হবে।
এমএইচএম/জেডএ/জেআইএম