দেশজুড়ে

গাজীপুরের শালবনে বাঁশ বাগান করে বিপাকে উপকারভোগীরা

ঢাকা বন বিভাগের অধীন গাজীপুর রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের পূর্ব বিটে শালবনে বাঁশ বাগান করে বিপাকে পড়েছেন উপকারভোগীরা। এতে দরিদ্র ওই পরিবারগুলো আর্থিকভাবে লাখ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

Advertisement

ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের পূর্ব বিটের আউলিয়া টেক এলাকায় মো. আলী হায়দার (৩৬), দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কাকলী (৩৫), আহাদ আলী (৬০) এবং আবু কালামের এক হেক্টর করে বাঁশ বাগানের প্লট রয়েছে। রাজেন্দ্রপুর পূর্ব বিটের সাবেক বিট কর্মকর্তা সৈয়দ আক্তারুজ্জামানের আমলে ওই চার জন উপকারভোগী ২০১৩-১৪ আর্থিক সনে শালবনে বাঁশ বাগান সৃজনের অনুমতি পান। পরবর্তীতে প্রায় সাত বছর বাঁশ বাগান প্লটগুলোতে অক্লান্ত শ্রম দেন উপকারভোগীরা। বিশেষ করে আলী হায়দারের এক হেক্টরের বাঁশ বাগান প্লট দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। অথচ ওই চারটি বাঁশ বাগানের প্লট বাতিল করে সম্প্রতি সুফল প্রকল্পে বাগান সৃজন কার্যক্রম শুরু করেছে স্থানীয় বিট অফিস।

আলী হায়দার অভিযোগ করে বলেন, ২০১৩ সালে তৎকালীন রাজেন্দ্রপুর পূর্ব বিট কর্মকর্তা সৈয়দ আক্তারুজ্জামানের অনুুরোধে বন দখল প্রতিরোধে তিনি এক হেক্টরে বাঁশ বাগান সৃজন কার্যক্রম শুরু করেন। পরে উপকারভোগীর দলিল পেতে এবং অফিস খবর বাবদ ওই বিট অফিসে তিনি ২৫ হাজার টাকা দেন। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কাকলীর কাছ থেকেও উপকারভোগীর দলিল প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২৫ হাজার টাকা নেয়া হয়।

তিনি বলেন, ‘গত বছরের নভেম্বরে বর্তমান পূর্ব বিট কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলী শেখ একটি উচ্ছেদ অভিযানে সহযোগিতা করতে তাকে ডেকে নিয়ে যান। পরে তিনি জানতে পারেন ওই বিট কর্মকর্তা বাদি হয়ে শাল কর্তন ও বন দখলের অভিযোগে গাজীপুর বন আদালতে তার বিরুদ্ধে দুটি পিওআর মামলা (মামলা নম্বর-১৩/২০২০ ও ১৫/২০২০) দায়ের করেছেন।’

Advertisement

আলী হায়দার বলেন, তার সৃজিত বাঁশ বাগান সফল হয়েছে। অথচ তাকে ওই বিট অফিসের পক্ষ থেকে বাঁশ বাগানে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছে। এমনকি তাকে আরও বন মামলার আসামি করে গাজীপুর থেকে বিতারিত করার হুমকিও দেয়া হয়েছে। তার অভিযোগ, বনভূমিতে অবৈধভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণে বাধা দেয়ার কারণে তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তা ও রেঞ্জ কর্মকর্তা।

আবুল কালামের অভিযোগ, বাঁশ বাগানের প্লট বাতিলের খবর পেয়ে তিনি, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কাকলী, আহাদ আলী এবং আলী হায়দারের স্ত্রী ফুলবানুকে সঙ্গে নিয়ে গেল বুধবার পূর্ব বিট কর্মকর্তা মো. আয়ুব আলী শেখের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় আইয়ুব আলী শেখ জানান, বাঁশ বাগানের প্লট বাতিল করে সুফল প্রকল্পের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ তিনি ২০১৩ সালে উপকারভোগীর দলিল পেতে ২৫ হাজার টাকা বিট অফিসে খরচ বাবদ নিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে রাজেন্দ্রপুর পূর্ব বিট কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলী শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। পাল্টা জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘আলী হায়দারের বাঁশ বাগান সফল হয়নি। সম্প্রতি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বাঁশ বাগান পরিদর্শন করেছেন। তাছাড়া আলী হায়দারসহ অন্য তিনজনের বাঁশ বাগানের উপকারভোগী হিসেবে দলিল নেই।’

মো. আমিনুল ইসলাম/এসআর/পিআর

Advertisement