করোনাভাইরাসের এ সময়ে সীমিত পরিসরে সড়কে গণপরিহন চলাচলের নির্দেশনা সরকার থেকে দেয়া হলেও রাজধানীর রাস্তায় যানবাহন চলছে পুরোদমে। রাজধানীর সড়কগুলোতে রীতিমতো যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশকেও।
Advertisement
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বরত এক পুলিশ সার্জেন্ট বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু হবে, এই সীমিত পরিসর বলতে কী বুঝিয়েছে, তা বোধগম্য নয়। সিগন্যাল বাতির দু’পাশের রাস্তায় তাকিয়ে দেখুন, ছোট বড় বাস, প্রাইভেটকার, জিপ গাড়ি, মাইক্রোবাস, পিকআপ ভ্যান, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও প্যাডেলচালিত রিকশাসহ সব ধরনের পরিবহন রাস্তায় নেমেছে। নীলক্ষেত কাঁটাবন থেকে ধানমন্ডি পর্যন্ত যানজট লেগেছে। সকাল থেকে প্রচণ্ড রোদে দাঁড়িয়ে এবং এই মুহূর্তে বৃষ্টিতে ভিজে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
‘এছাড়া দিনকে দিন রাজধানীসহ সারাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এবং এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও রাস্তায় মানুষের অভাব নেই। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ডিউটি করতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে। আতঙ্ক ভয় সার্বক্ষণিক তাড়া করে ফিরছে। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা না বলে কি, আমাদের জীবনের দাম নেই?’
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) আনুমানিক দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যালে ডিউটিরত একজন পুলিশ সার্জেন্ট ক্ষোভ প্রকাশ করে এ কথাগুলো বলছিলেন। এ সময় বাইরে বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টিতে ভিজেই ডিউটি করছিলেন ওই পুলিশ সার্জেন্ট।
Advertisement
শাহবাগ থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি অভিমুখে রাস্তায় ব্যাপক যানজট দেখা দেয়। যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য ওই ট্রাফিক সার্জেন্ট নীলক্ষেত কাঁটাবন থেকে বাটা সিগন্যাল অভিমুখী যানবাহনগুলো আটকে রেখেছিলেন। এদিকে বাটা সিগন্যালের পশ্চিম দিকে সোজা সায়েন্স ল্যাবরেটরির মোড় পর্যন্ত রাস্তায়ও ব্যাপক যানজট দেখা যায়। চারদিক থেকে চলাচল করা গাড়িগুলো নিয়ন্ত্রণে সেখানে শুধু ওই পুলিশ সার্জেন্ট এবং একজন কনস্টেবল কাজ করছিলেন।
শুধু বাটা সিগন্যালেই নয়, সরেজমিন পরিদর্শনকালে রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় সরকারি ও বেসরকারি মালিকানার বাসসহ বিভিন্ন ধরনের গণপরিবহন চলতে দেখা যায়। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখনও ঊর্ধ্বমুখী হলেও জীবন-জীবিকার তাগিদে টানা দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা সাধারণ ছুটি তুলে নেয় সরকার। একই সঙ্গে বন্ধ থাকা রাজধানীসহ সারাদেশে গণপরিবহন সীমিত আকারে চালুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এজন্য আগের তুলনায় ৬০ শতাংশ ভাড়াও বাড়ানো হয়েছে।
কিন্তু সড়কের চিত্র দেখে বোঝা গেল- গণপরিবহন চলাচল সীমিত অবস্থায় নেই। রাজধানীর বিভিন্ন রুটে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রী পরিবহনে এবং বেশি ভাড়া আদায়ের কারণে বাসগুলোতে তুলনামূলকভাবে যাত্রী কম দেখা যাচ্ছে। বাসের তুলনায় অন্যান্য ধরনের পরিবহন মানুষকে যাতায়াত করতে বেশি দেখা যাচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ের মতো রাস্তার আয়তনের হিসেবে গাড়ি বেশি চলাচল করায় ক্ষণে ক্ষণে বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এমইউ/এফআর/পিআর
Advertisement