গণপরিবহনে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে জারি করা সরকারের প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আজ।
Advertisement
এর আগে মঙ্গলবার (২ জুন)আংশিক শুনানি হয়েছে। এ বিষয়ে আরও শুনানির জন্য বুধবার (৩ জুন) দিন ধার্য থাকলেও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ডকুমেন্ট উপস্থাপন করার ফলে বিষয়টি দেখার জন্যে সময় নেয়া হয়েছে। তাই এ বিষয়ে শুনানি করতে বৃহস্পতিবার (৪ জুন) দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।
অন্যদিকে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, আদালতে বুধবার শুনানিতে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী গণপরিবহনে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারির আগে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা? সেখানে কারা উপস্থিত ছিলেন? সেখানে কী কী সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এমন বিষয়ে জানানোর জন্যে বলেছিলেন। বুধবার মন্ত্রণালয় বিভিন্ন ডকুমেন্ট উপস্থাপন করার পর এসব দেখার জন্য সময় আবেদন করেছিলাম। তাই শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার (৪ জুন)দিন ঠিক করেছেন আদালত।
Advertisement
বুধবার (৩ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল বেঞ্চে এই রিটের শুনানি চলছে। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।
এর আগে মঙ্গলবার (২ জুন) রিটের ওপর আংশিক শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তখন রিটকারী আইনজীবী জানান, মাননীয় আদালত ডিএজি’র কাছে জানতে চেয়েছেন যে, এই ভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারির পূর্বে এ বিষয়ে কোনো মিটিং হয়েছে কিনা এবং সেখানে কী রেজুলেশন নেয়া হয়েছে। ওই মিটিং মিনিটস কী (কবে মিটিং হয়েছে, কী কী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, পরবর্তীতে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হবে, পদক্ষেপগুলো কীভাবে গ্রহণ করা হবে) তা জানতে চেয়েছেন।
এর আগে গণপরিবহনে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে জারি করা সরকারের প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হয়। ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সোমবার (১ জুন) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী। রিটে সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপনটি স্থগিত চাওয়া হয়েছে।
Advertisement
রিটের বিবাদীরা হলেন- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব (সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ) এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টরা।
আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লব জানান, গণপরিবহনে দেশের সাধারণ মানুষ যাতায়াত করে, যাদের প্রাইভেটকার নেই। দেশের এই পরিস্থিতিতে কোন যুক্তিতে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে, যেখানে সাধারণ মানুষের আয়-রোজগার বন্ধ?
আইনজীবী বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় আমাদের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের অধিকাংশ কর্মহীন হয়ে বেকার এবং মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ অবস্থায় ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি অসহায় দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে আরও বেশি বিপর্যস্ত ও হতাশাগ্রস্ত করেছে। এ কারণে প্রজ্ঞাপনটি স্থগিত চাওয়া হয়েছে।
এদিকে একইদিন (১ জুন) ভাড়া বাড়িয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপনটি স্থগিত চেয়ে সরকারকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন।
এর আগে রোববার (৩১ মে) গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ৮০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব করলেও তা কমিয়ে ৬০ শতাংশ করে মন্ত্রণালয়।
এফএইচ/এমএফ/জেআইএম