করোনাভাইরাসের সঙ্কটের মধ্যে এক মাসেরও ভাড়া মাফ দেবেন না রাজশাহী মহানগর মেস মালিকরা। এরই মধ্যে এপ্রিল, মে ও জুন মাসের ভাড়া আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
Advertisement
যদিও করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে রাজশাহীতে মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৪০ শতাংশ ভাড়া মওকুফ করার কথা ছিল তাদের।
গত সোমবার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উল্লিখিত তিন মাসের পুরো ভাড়া পরিশোধ করতে হবে শিক্ষার্থীদের। দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনাপূর্বক জুলাই মাসের ভাড়া সংক্রান্ত সমিতির সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে।
তবে নির্দেশনায় অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের প্রতি মানবিক আচরণ করা, কোনো শিক্ষার্থী ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রে মেস মালিকদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করলে; তা মেস মালিক সমিতিকে অবগত করা এবং করোনার কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের ভাড়া সর্বোচ্চ মওকুফ করার জন্য মালিকদের নিজ বিবেচনায় মানবিক হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন তারা।
Advertisement
২৮ মে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা এবং রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হকের সঙ্গে মেস মালিক সমিতির নেতাদের মেস ভাড়া সংক্রান্ত আলোচনা সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এদিকে, সম্পূর্ণ ভাড়া আদায়ের নির্দেশনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। সাইফুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, টিউশনি করে পড়াশোনার খরচ চালাতে হয় আমাকে। করোনার কারণে সেই সুযোগ আর নেই। তার ওপর গত তিন মাসে মেসের পানি, বিদ্যুৎসহ কোনো রকম সুবিধা আমরা নিইনি। সেখানে সম্পূর্ণ ভাড়া নেয়া আমাদের ওপর অবিচার ও অমানবিক আচরণ।
শহিদুল সরকার নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, দেশের এই সঙ্কটের মধ্যে মেস মালিকদের এমন আচরণ রীতিমতো অমানবিক। বিশেষ করে আমরা যারা মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে পড়াশোনা করছি তাদের জন্য বিষয়টা অনেক কষ্টসাধ্য।
এর আগে ১০ মে রাজশাহী জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, মেট্রোপলিটন পুলিশ ও মেস মালিক সমিতির এক যৌথ সভায় এপ্রিল মাস থেকে প্রত্যেক বোর্ডারকে স্ব স্ব ভাড়ার ৬০ শতাংশ দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু মাস পেরোতে না পেরোতেই সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো মেস মালিকরা।
Advertisement
এ বিষয়ে মেস মালিক সমিতির সভাপতি এনায়তুল রহমান বলেন, অসচ্ছল ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বিষয়টি বিবেচনা করব। আর শিক্ষার্থীদেরও আমাদের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। মেস বন্ধ হওয়ার পর গত দুই মাসের ভাড়া এখনো দেয়নি শিক্ষার্থীরা। তাই সার্বিক দিক বিবেচনায় আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সালমান শাকিল/এএম/এমএস