জাতীয়

করোনায় টানা দ্বিতীয় দিনে ৩৭ মৃত্যু, শনাক্ত আরও ২৬৯৫

দেশে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো এতো সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হলো। এতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪৬ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৬৯৫ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৫ হাজার ১৪০ জনে।

Advertisement

বুধবার (৩ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন।

তিনি ৫০টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ হাজার ১০৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১২ হাজার ৫১০টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো তিন লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৩টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও দুই হাজার ৬৯৫ জনের দেহে। ফলে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ হাজার ১৪০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আরও ৩৭ জনের। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪৬ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৪৭০ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১১ হাজার ৫৯০ জনে।

নতুন করে যারা মারা গেছেন তাদের ২৮ জন পুরুষ ও নয়জন নারী। ১৯ জন ঢাকা বিভাগের, ১৩ জন চট্টগ্রাম বিভা‌গের, দুজন রংপুর বিভাগের এবং একজন করে সিলেট ও খুলনা বিভাগের। ৩১ জন মারা গেছেন হাসপাতালে, পাঁচজন বাসায় এবং একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। বয়সের দিক থেকে ২১ থে‌কে ৩০ বছরের একজন, ত্রিশোর্ধ্ব তিনজন, চল্লিশোর্ধ্ব পাঁচজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১২ জন, ষাটোর্ধ্ব ১২ জন এবং সত্তরোর্ধ্ব চারজন মারা গেছেন।

Advertisement

গত মঙ্গলবারের (২ জুন) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ জন মারা গেছেন। ১২ হাজার ৭০৪টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও দুই হাজার ৯১১ জনের দেহে, যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু সমানসংখ্যক থাকলেও কমেছে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৪০ জনের। সেটি জানানো হয় ৩১ মে’র বুলেটিনে।

বুধবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এখন পর্যন্ত শনাক্ত বিবেচনার সুস্থতার হার ২১ শতাংশ ০২ শতাংশ। এবং মৃত্যুহার ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৩৯৫ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ৬ হাজার ৪৯৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৩৭ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৫৩৬ জন।

দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৭ হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২। রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে করোনা ডেডিকেটেড ২ হাজার বেডের হাসপাতালে রোগী ভর্তি শুরু হয়েছে।

Advertisement

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৪২৮ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ লাখ ৯২ হাজার ৮১৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ১৪৫ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ৩৪ হাজার ৯৮৫ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৭ হাজার ৮২৮ জন।

দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।

ডা. নাসিমা বরাবরের মতোই করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান।

করোনাভাইরাসের প্রকোপে গোটা বিশ্ব এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। চীনের উহান শহর থেকে গত ডিসেম্বরে ছড়ানোর পর এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় পৌনে ৬৫ লাখ। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে তিন লাখ ৮২ হাজার। তবে পৌনে ৩১ লাখের মতো রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ।

পিডি/এমইউ/এইচএ/পিআর