আগামী অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল কল রেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হতে পারে। একই সঙ্গে তামাকজাত পণ্যের শুল্কও বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার।
Advertisement
আগামী ১১ জুন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার কথা রয়েছে। যদি সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়, তবে তা ঘোষণার দিন থেকেই এটা কার্যকর হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজেটে অর্থের সরবরাহ বৃদ্ধি ও তামাক বিরোধী সংগঠনগুলোর দাবির মুখে এ দুটি খাতে সম্পূরক শুল্ক বাড়াতে চায় এনবিআর। ইতোমধ্যে এনবিআর থেকে প্রস্তুতকৃত বাজেট প্রস্তাবনায় এমন প্রস্তাব যুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বাজেট প্রস্তাবের প্রকৃত সিদ্ধান্ত নেবে অর্থ মন্ত্রণালয়।
এনবিআরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে যেসব খাতে ক্ষতি কম হয়েছে ওইসব খাত থেকে সরকার ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে রাজস্ব বাড়ানোর পরিকল্পনা নিচ্ছে। সরকার চাচ্ছে জনজীবনে সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন উৎসে করের বোঝা না চাপাতে। টেলিকম ও তামাক খাতসহ বেশকিছু খাতে করোনায় খুব বেশি প্রভাব পড়েনি। এসব বিবেচনায় এই খাতে সম্পূরক শুল্ক-কর কিছুটা বাড়ানোর চিন্তা করছে।
Advertisement
সূত্র জানায়, আসছে বাজেটে মোবাইল কল রেটে বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে। অর্থাৎ নতুন করে ৫ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্তমানে এছাড়াও মোবাইল ব্যবহারকারীরা টকটাইম এবং ক্ষুদে বার্তায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও এক শতাংশ সারচার্জ রয়েছে। আর মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের ভ্যাট প্রযোজ্য আছে ৫ শতাংশ। অর্থাৎ সম্পূরক শুল্ক বাড়লে মোবাইল ফোনে কথা বলা, এসএমএস পাঠানো ও ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচও বেড়ে যাবে।
এক্ষেত্রে এনবিআরের যুক্তি হচ্ছে, সরকার করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণ ছুটি আরোপের পর মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেটের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই হিসাবে এখান থেকে বড় আয় হতে পারে।
অন্যদিকে সিগারেট, বিড়ি, গুল ও জর্দাসহ তামাকজাত সামগ্রীর ওপর সম্পূরক শুল্ক বিভিন্ন ধাপে হতে পারে। বেশি রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে এনবিআর সিগারেটের দামের স্ল্যাবগুলোও সংশোধন করতে পারে।
তামাকবিরোধী সংস্থাগুলো স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব বিবেচনা করে তামাকজাত পণ্যের জন্য অতিরিক্ত শুল্কের দাবি করে আসছে। এনবিআরের কাছে বাজেট প্রস্তাবগুলোতে সংগঠনগুলো অনুমান করেছিল যে, বাজেটে সিগারেটের জন্য নির্দিষ্ট কর এবং দ্বি-স্তরের মূল্য নির্ধারণের ব্যবস্থার মাধ্যমে এনবিআর প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করা সম্ভব।
Advertisement
বর্তমান দেশে মোট তামাক ব্যবহারকারী মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি ৭৮ লাখের বেশি, যা মোট জনগোষ্ঠীর (১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব) ৩৫.৩ শতাংশ। এর মধ্যে প্রায় ৪৮ শতাংশ অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠী তামাক ব্যবহার করে, যা খুবই উদ্বেগজনক। এছাড়া ৪ কোটির বেশি মানুষেও ওপর ধূমপায়ীদের প্রভাব পড়ে।
এসআই/এমএসএইচ/এমএস