জাতীয়

এমপি লিটনের জামিন নামঞ্জুর, শুনানি ২৫ অক্টোবর

সুন্দরগঞ্জে শিশু শাহাদত হোসেন সৌরভকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা এবং হাফিজার রহমান মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির বাড়ি ভাঙচুরের পৃথক দুটি মামলায় গ্রেফতার গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মো. মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের আইনজীবীরা বুধবার আদালতে জামিনের আবেদন করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুন্দরগঞ্জ আদালতে জামিনের আবেদন করা হলে বিচারক অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাইনুল হাসান ইউসুফ আবেদনটি গ্রহণ করে আগামী ২৫ অক্টোবর এর শুনানির দিন ধার্য করেন। এমপি লিটনের অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. সিরাজুল ইসলাম বাবু জানান, জামিনের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এমপি লিটনের সঙ্গে গুলিবিদ্ধ শিশু সৌরভ বা তার পরিবারের কোনো পূর্ব শত্রুতা বা দ্বন্দ্ব ছিল না। কাজেই তাকে হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগটি গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরও বলেন, আবেদনে বলা হয়েছে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মানবতা বিরোধী অপরাধে আদালতে জামায়াত নেতা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির আদেশ ঘোষিত হওয়ার পর জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা উপজেলা সদরসহ সমগ্র সুন্দরগঞ্জে সন্ত্রাস এবং তাণ্ডব লীলা চালায়। এই ঘটনায় এমপি লিটন বাদী হয়ে জামায়াত দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা আব্দুল আজিজসহ ৩৮৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫ থেকে ৬ হাজার জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে এমপি লিটনকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে এ মামলা দায়ের করা হয়। উল্লেখ্য, গত ২ অক্টোবর ভোরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের গোপালচরণ এলাকায় এমপি লিটনের পিস্তুলের গুলিতে আহত হয় শিশু সৌরভ। এমপি লিটন ওই সময় মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। ওই গ্রামের সাজু মিয়ার ছেলে সৌরভ গোপালচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। শিশুটি এখনো রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় সৌরভের বাবা বাদী হয়ে ৩ অক্টোবর এমপি লিটনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া এমপি লিটনের বিরুদ্ধে বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে ৬ অক্টোবর সুন্দরগঞ্জ থানায় আরও একটি মামলা করেন সর্বানন্দ ইউনিয়নের উত্তর সাহাবাজ গ্রামের বাসিন্দা লিটনের প্রতিবেশি হাফিজার রহমান নামে এক ব্যক্তি। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ওই সংবাদ প্রকাশিত হলে জাতীয় ও অন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিষয়টি নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশের প্রেক্ষিতে ১৪ অক্টোবর রাতে রাজধানীর উত্তরায় বোনের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মাইক্রোবাসযোগে পরদিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তাকে গাইবান্ধা ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। পরে গাইবান্ধা জেলা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সুন্দরগঞ্জ) আদালতে তাকে হাজির করা হয়। এসময় তার পক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করলে বিচারক মো. মাইনুল হাসান ইউসুফ শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অমিত দাশ/এসএস/পিআর

Advertisement