দেশজুড়ে

৪ বছর ধরে চাল আত্মসাৎ করা আ.লীগ নেতার ডিলারশিপ বাতিল

খুলনার রূপসায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাতের দায়ে সরদার মিজানুর রহমান (৪৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার ডিলারশিপ বাতিল করা হয়েছে। তিনি বিগত ৪ বছর ধরে ১৪টি পরিবারের নামে মিথ্যা কার্ড তৈরি করে চাল আত্মসাৎ করে আসছিলেন। যা জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত করে প্রমাণ পেয়েছিল উপজেলা প্রশাসন।

Advertisement

সোমবার (১ জুন) দুপুরে রূপসা উপজেলা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি কমিটির সভায় তার ডিলারশিপ বাতিল করা হয়। অভিযুক্ত মিজানুর রহমান উপজেলার শ্রীফলতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং রূপসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার আবুল কাসেম ডাবলুর আপন ভাই। তবে বর্তমানে মিজানুর রহমান পলাতক আছেন বলে জানা গেছে।

রূপসা উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সরদার মিজানুর রহমান শ্রীফলতলা ইউনিয়নের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ১০ টাকা মূল্যে বিতরণ করা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার। ২০১৬ সাল থেকে তিনি ১৪টি পারিবারের চাল নিয়মিত আত্মসাৎ করে আসছেন। নাম থাকা সত্ত্বেও চাল না পাওয়া ওই ১৪ ব্যক্তি হলেন- উপজেলার নন্দনপুর গ্রামের শাহিদ শেখ, মো. সেলিম শেখ, মো. আনিচুর রহমান, মো. সাইদুর রহমান, খালেদা বেগম, মো. জাহিদ মুন্সি, মো. মুকুল শেখ, মো. কামাল শেখ, মো. রফিকুল শেখ, মমতাজ, নাসিম হাওলাদার, ওলিয়র হাসান, আসলাম খাঁ ও মো. ফারুক হাওলাদার।

তারা জানান, তাদের নাম, ছবি ও ন্যাশনাল আইডি কার্ড নেয়া হয়েছিল ২০১৬ সালে। তবে তাদের নামে কার্ড হয়েছে কিনা তা জানানো হয়নি। তারা কখনও ১০ টাকা মূল্যের এই চাল উত্তোলনও করেননি।

Advertisement

রূপসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার বলেন, আমি এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিনে তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। এ সময়ে রূপসা থানার ওসি ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাও ছিলেন। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, ২০১৬ সাল থেকে তাদের এ চাল দেয়া হচ্ছে না, এমনকি তারা জানেনও না যে তাদের নামে কার্ড আছে। সুতারাং ডিলার সরদার মিজানুর রহমান যে তাদের চাল আত্মসাৎ করেছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

আমরা এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে জেলা প্রশাসককে অবগত করেছিলাম। আজ উপজেলা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির সভায় তার ডিলারশিপ বাতিল করা হয়। এছাড়া তার জামানত ২০ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ওই ১৪টি পরিবারের এ যাবৎকালের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। তা আদায় করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলার সুপারিশ করা হয়নি। তবে ভুক্তভুগী পরিবারগুলো চাইলে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারবেন।

আলমগীর হান্নান/এফএ/জেআইএম

Advertisement