বাসের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও গণবিরোধী উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। জোটের নেতৃবৃন্দ বলেন, বাস ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত মানুষের জন্য ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’।
Advertisement
রোববার (৩১ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ নেতা কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র অন্যতম সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা কমরেড মানস নন্দী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশরেফা মিশু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড আকবর খান, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক কমরেড হামিদুল হক।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন, সিপিবি প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল্লাহ আল কাফি রতন।
Advertisement
নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু যখন ঊর্ধ্বমুখী, তখন প্রয়োজন ছিল আরও কঠোর লকডাউন। কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং টেকনিক্যাল কমিটিসহ সবার মতামত উপেক্ষা করে অফিস-আদালত, দোকান-পাট, গণপরিবহনসহ সবকিছু চালুর ঘোষণা দিয়ে জনগণকে আরও মৃত্যু ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে সরকার।
তারা বলেন, গত দুই মাস সরকার শ্রমজীবীসহ সাধারণ মানুষের খাদ্য আর্থিক নিরাপত্তাসহ কার্যত কোনো দায়িত্ব না নিয়ে ৪ কোটি দরিদ্র মানুষকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলেছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকসহ লাখ-কোটি কর্মক্ষম মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে খাদ্য, নগদ অর্থসহ নানা সহযোগিতা নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর দরকার ছিল। কিন্তু সরকার নিজেদের দায়িত্ব পালন না করে সবার মতামত উপেক্ষা করে গণপরিবহন চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার বলেছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চলবে, অর্থাৎ ৫০ শতাংশ সিট খালি রাখবে। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা বলে যে সরকার প্রশাসন, বিআরটিএ ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচলে এবং লাইসেন্সবিহীন চালকের গাড়ি চালানো বন্ধ করতে পারেনি। সেখানে কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়ি চালাবে তা বোধগম্য না। তদুপরি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অন্যায়ভাবে একতরফা মালিকদের স্বার্থ রক্ষায় বাসের ভাড়া বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা কর্মহীন ও বেকার হয়ে পড়াসহ করোনায় বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষের জন্য ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে বাড়তি চাপ তৈরি করবে।
তারা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম এক-তৃতীয়াংশে নেমে আসার পরও আমাদের দেশে তেলের দাম কমানো হয়নি। ফলে জ্বালানির দাম কমালে ভাড়া বৃদ্ধির প্রয়োজন হবে না। নেতৃবৃন্দ বাসের ভাড়া বৃদ্ধি না করে বিভিন্ন সড়কে সরকারি টোল আদায় বন্ধ, পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমানোর দাবি জানান।
Advertisement
জেইউ/এমএসএইচ/এমএস