করোনাভাইরাস সংকটে অফিস খোলা ও গণপরিবহন সীমিত আকারে চলাচলের সরকারি সিদ্ধান্তের পর বাসের ভাড়া ৮০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। বিআরটিএ-এর ওই সুপারিশকে গণবিরোধী উল্লেখ করে চলা সমালোচনার মধ্যেই রোববার সুপারিশের মাত্র ২০ শতাংশ কমিয়ে গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
Advertisement
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় কর্তৃক ওই প্রজ্ঞাপন জারির পর তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে তা বাতিলের দাবিতে সারাদেশে মানববন্ধন, সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
রোববার (৩১ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। আগামী ২ জুন এ কর্মসূচি পালিত হবে।
বামজোটের সকল জেলা-উপজেলা শাখাকে এ কর্মসূচি পালনের জন্য কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
Advertisement
বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে, প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোট নেতৃবৃন্দ বলেন, বাসের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও গণবিরোধী।
জোটের নেতৃবৃন্দ বলেন, এটা করোনায় বিপর্যস্ত মানুষের ওপর ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ নেতা কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র অন্যতম সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা কমরেড মানস নন্দী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশরেফা মিশু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড আকবর খান, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক কমরেড হামিদুল হক।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন, সিপিবি প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল্লাহ আল কাফি রতন।
Advertisement
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার নিজেদের দায়িত্ব পালন না করে সকলের মতামত উপেক্ষা করে লকডাউন তুলে নিয়ে সকল গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার বলেছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চলবে অর্থাৎ ৫০ শতাংশ সিট খালি রাখবে। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা বলে যে সরকার প্রশাসন, বিআরটিএ ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচলে ও লাইসেন্সবিহীন চালকের গাড়ি চালানো বন্ধ করতে পারেনি। সেখানে কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়ি চালাবে তা বোধগম্য নয়। সম্পূর্ণ অযৌক্তি ও অন্যায়ভাবে একতরফা মালিকদের স্বার্থরক্ষায় বাসের ভাড়া বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্ত কর্মহীন ও বেকার হয়ে পড়াসহ করোনায় বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষের জন্য ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে বাড়তি চাপ তৈরি করবে।
বক্তাগণ বলেন, বাসের ভাড়া পূর্বে যা বৃদ্ধি করা হয়েছিল সেটাই ছিল অযৌক্তিক। সেই সময়ও জনগণ তা মানেনি। নতুন করে বাসভাড়া বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান তারা।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম এক তৃতীয়াংশে নেমে আসার পরও আমাদের দেশে তেলের দাম কমানো হয়নি। ফলে জ্বালানির দাম কমালে ভাড়া বৃদ্ধির প্রয়োজন হবে না। নেতৃবৃন্দ বাসের ভাড়া বৃদ্ধি না করে বিভিন্ন সড়কে সরকারি টোল আদায় বন্ধ, পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমানোর দাবি জানান। জেইউ/এমএআর/এমএস