গবেষণায় দেখা গেছে, লোহা ও প্লাস্টিকের ওপর করোনাভাইরাস তিনদিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে। তবে তামার ওপর পড়লে মাত্র চার ঘণ্টায় প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি নিজেই প্রাণহীন হয়ে যায়। এ কারণে করোনা মহামারি প্রতিরোধে দরজার হাতল, সিঁড়ির হ্যান্ডরেইল ও শপিংট্রলির হাতলে তামার প্রলেপ দেয়া উচিত বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের এক গবেষক।
Advertisement
প্রায় দুই দশক ধরে তামার অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রভাব নিয়ে গবেষণা করছেন ইউনিভার্সিটি অব সাউদাম্পটনের সিনিয়র মাইক্রোবায়োলজিস্ট উইলিয়াম কেভিল। তিনি সম্প্রতি ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমসকে বলেন, করোনায় আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি হাতের ওপর হাঁচি-কাশি দেয়ার পর সেই হাত দিয়ে অন্য কোনও ব্যক্তি বা বস্তুকে স্পর্শ করার মাধ্যমেই ভাইরাস ছড়ায়। রোগীর স্পর্শ করা বস্তু স্পর্শের পর সেই হাত মুখে দিলে যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন।
ভাইরাসটি মানুষের চোখ, নাক ও মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে, চামড়ার ভেতর দিয়ে নয়। এ কারণে বাড়িঘর, গণপরিবহনে দরজার হাতলগুলোতে তামার প্রলেপ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এ গবেষক।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস যখন তামার ওপর পড়ে তখন এর ধাতব আয়নগুলো ভাইরাসের লিপিড মেমব্রেনকে আক্রমণ করে এবং ভাইরাসের কোষে প্রবেশ করে এর ডিএনএ ধ্বংস করে দেয়, অর্থাৎ ভাইরাসটিকে পুরোপুরি মেরে ফেলে।
Advertisement
প্রফেসর কেভিল জানান, পোল্যান্ডের বাসগুলোতে ইতোমধ্যেই তামার প্রলেপযুক্ত হাতল বসানো হয়েছে। চিলি-ব্রাজিলের বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন কিয়স্কগুলোও তামার প্রলেপযুক্ত।
তার মতে, ভাইরাস নির্মূলে ফাস্টফুড রেস্টুরেন্টের স্ক্রিন ও ক্যাশ মেশিনগুলোতে তামার প্রলেপ দেয়া উচিত। এছাড়া জিমে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতিতেও এই ধাতব প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যাবে।
গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে এক গবেষণায় দেখা গেছে, হাসপাতালে ব্যবহৃত যেসব বেডে তামার প্রলেপ দেয়া হয়েছে সেগুলোতে সাধারণ বেডের তুলনায় ৯৫ শতাংশ কম ব্যাকটেরিয়া রয়েছে।
সাউথ ক্যারোলিনার মেডিকেল ইউনিভার্সিটির গবেষকরা সেসময় বলেছিলেন, হাসপাতালগুলোতে তামার প্রলেপযুক্ত বেড ব্যবহারে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস পেতে পারে। এর ফলে স্বাস্থ্যসেবার উপকরণগুলো পরিষ্কার রাখাও সহজ হয়ে যাবে।
Advertisement
সূত্র: ডেইলি মেইল
কেএএ/পিআর