আদিত্য আরাফাত
Advertisement
এটা ঠিক যে, সাধারণ ছুটি বা লকডাউনের সময় আরও দীর্ঘ হলে দেশ দুর্ভিক্ষের দিকেই যাবে। সরকারও নিশ্চয় সেটা চাইবে না। জীবন বাঁচানোর মতো জীবিকা ঠিক রাখাও এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। এরইমধ্যে অর্থনীতিতে রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে। গেল দুই মাস বিভিন্ন সেক্টরের শ্রমজীবী মানুষ ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করেছে।
শুধু পরিবহন সেক্টরের শ্রমিকদের কথাই চিন্তা করুন। গাড়ি না চলায় কী অবর্ণনীয় দিন তারা পার করেছেন! এমন অনেক পেশার লোকজনকেই করোনাকাল অর্থনৈতিক দুর্দশায় ফেলে দিয়েছে। চিড়েচ্যাপটা অবস্থা হয়েছে মধ্যবিত্তদেরও।
টানা দুই মাসের বেশি প্রায় সবকিছু বন্ধ। এভাবে তো আর দেশ চলতে পারে না! আবার আগের মতো সব খুলে দেয়া হলেও মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশে এই অচলাবস্থা কতদিন চালিয়ে রাখতে পারে?
Advertisement
লকডাউনে উন্নত বিশ্বগুলোর অবস্থা যেখানে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে সেখানে বাংলাদেশের অবস্থা কী তা সহজে অনুমেয়। যদিও বাংলাদেশে সে অর্থে লকডাউন হয়নি। লকডাউন অনেকটা ‘কাজির গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই’ অবস্থা।
হ্যাঁ, আমরা গেল দুই মাস সরকারের নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী কার্যকর লকডাউন মেনে চললে হয়তো করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারতাম। সরকারও যদি শিথিলতা না দিয়ে আরেকটু কঠোর হতো তাহলে করোনা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ত না। প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তের রেকর্ড ভাঙত না।
এখন আন্দাজ করা যায় যে, প্রতিদিন যদি ২০-৩০ হাজার পরীক্ষা হয় তাহলে আক্রান্তের হারও পাল্লা দিয়ে বাড়বে। আক্রান্ত আর মৃত্যুর হার যখন বাড়ছে তখন দেশে সাধারণ ছুটিও শেষ হচ্ছে। সরকার এখন দুর্ভিক্ষ বা অর্থনৈতিক মহামন্দা ঠেকাতে হয়তো এর বিকল্প দেখছে না।
করোনা পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবিলা করা দেশগুলোর উদাহরণ টেনে বলা যায় যে, সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকে দুটি মাস বাংলাদেশ ‘কার্যকর লকডাউনে' থাকলে হয়তো করোনা এ দেশে মহামারির দিকে যেত না। এখন টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। এমন অবস্থায় আবার আমাদের অফিস-আদালত খুলবে। রাস্তায় গণপরিবহনসহ সব গাড়ি চলবে। ঘরে বসে থাকার দিনও ফুরিয়ে এসেছে।
Advertisement
এখন যাদের শরীরের ইমিউন মানে রোগ প্রতিরোধ শক্তি ভালো তারা টিকে থাকবেন। শারীরিকভাবে যারা দুর্বল, যাদের রোগ প্রতিরোধ শক্তি কম তাদের হয়তো পরিণতি ভালো হবে না (কঠিন শব্দ বলতে চাই না)। করোনায় এখন কায়দা করে (স্বাস্থ্যবিধি মেনে) বাঁচতে হবে। এছাড়া আর বিকল্প নেই। কোভিড-১৯ এর সাথে এখন টিকে থাকাই চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জে এখন আমাদের জয়ী হতে হবে।
লেখক: সাংবাদিক
এইচআর/বিএ