সাহিত্য

কল্পনা খন্দকারের কবিতা

লগ্নভ্রষ্টা

Advertisement

একদিন কাউকে কিছু না জানিয়ে ঠাকুরকে সাক্ষী রেখে আমার সিঁথিতে সিঁদুরের রঙে রাঙিয়ে দিলে। বললে, কথাটা যেন কাউকে না বলি এমনকি তোমার বন্ধুদেরও না।সেদিনের পর থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে রোজ তোমার নাম করে সিঁথিতে সিঁদুর দিতাম, আর চাইতাম আমার সিঁদুর অক্ষয় হোক! এভাবে যে কতোদিন দিয়েছি মনে নেই। তারপর একদিন সামান্য ক’টা টাকার জন্য বিয়ের আসর থেকে তোমার মা তোমায় তুলে নিয়ে গেলেন। তুমিও মায়ের বাধ্য ছেলের মত কিছুই না বলেই চলে গেলে। সেদিনের পর থেকে সমাজে আমার একটা নতুন পরিচয় হলো লগ্নভ্রষ্টা! আমি হয়ে গেলাম সমাজের বুকে একেবারে অস্পৃশ্যা! আমার মুখ দেখলেই যেন সবার অমঙ্গল হয়, আমি যেন সমাজের কলঙ্ক! সেদিনও সবেমাত্র স্নান সেরে সিঁথিতে সিঁদুর দিয়েছি, অমনি মা আমার সিঁথি থেকে সিঁদুরটুকু মুছে দিয়ে বললেন, লগ্নভ্রষ্টাদের স্বপ্ন দেখতে নেই! সেদিনের পর থেকে আমি আর স্বপ্ন দেখি না- লাল পেড়ে শাড়ি, সিঁথিভর্তি সিঁদুর, হাতভর্তি লাল কাঁচের চুড়ি; শুধু সিঁদুর দেখলেই তোমার নাম করে সিঁদুর পরার লোভটা কিছুতেই সামলাতে পারি না!

এসইউ/জেআইএম

Advertisement