জাতীয়

প্রশাসন ক্যাডারের ৬৭ কর্মকর্তা করোনা আক্রান্ত, সুস্থ ৪০

করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) এখন পর্যন্ত (২৮ মে) প্রশাসন ক্যাডারের মোট ৬৭ জন কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ইতোমধ্যে ৪০ জন সুস্থ হয়ে গেছেন। এখনও কোভিড-১৯ পজিটিভ আছেন ২৭ জন।

Advertisement

আক্রান্তদের মধ্যে মাঠ প্রশাসনে কর্মরত আছেন ৪৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ৭ জন, তবে চারজনই অবসরপ্রাপ্ত।

বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসনসহ যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন তাদের কেউ আক্রান্ত হলে ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ দেবে সরকার।

Advertisement

এ ক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হলে গ্রেডভেদে পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকা পাবেন। আর তারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে এর পাঁচগুণ অর্থাৎ ২৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা পাবেন।

করোনা পজিটিভ কর্মকর্তা

করোনা পজিটিভ কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (উপসচিব) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, কেরানীগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানজিদা পারভীন ও কামরুল হাসান সোহেল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. হাবিবুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. খাইরুল ইসলাম, মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মো. মনিরুজ্জামান ও স্থানীয় সরকার উপপরিচালক এস এম শফিক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, মুন্সিগঞ্জ সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ মেজবাউল সাবেরিন, মুন্সিগঞ্জ ডিসি অফিসের সহকারী কমিশনার মো. ইলিয়াস শিকদার, লালবাগ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা রহমান, স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মপ্রধান মো. মহিউদ্দিন কাদেরী, মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আইরিন আক্তার।

এ ছাড়া পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহমুদ হাসান, মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসান বিন মুহাম্মদ আলী, জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান করোনা পজিটিভ।

Advertisement

করোনা পজিটিভ কর্মকর্তাদের মধ্যে আরও রয়েছেন- সিলেট ওসমানীনগরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফসানা তাসলিম, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মাসুদুর রহমান, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. রাজিব হোসেন, সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরভেজুর রহমান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উপ-প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মাহমুদা হাসান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আইন কর্মকর্তা নাজমুল হুদা শামীম এবং নেত্রকোণা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. জাফর আরিফ চৌধুরী।

করোনা পজিটিভ কর্মকর্তারা কর্মস্থল কিংবা নিজ বাড়িকে আইসোলেশনে আছেন। কেউ কেউ আছেন হাসপাতালে।

সুস্থ হলেন যারা

বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন অর রশীদ, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বিশ্ব ব্যাংকের কনসালটেন্ট (যুগ্ম-সচিব) শরীফ মো. মাসুদ, আইসিটি অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মুনিমা হাফিজ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক (উপসচিব) শাহ মোহাম্মদ মাহবুব, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) মো. ওয়াহেদুর রহমান, জেদ্দার লেবার কাউন্সিলর মো. আমিনুল ইসলাম, হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, স্বাস্থসেবা বিভাগের উপসচিব আবু রায়হান মিঞা, জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব তাহমিনা বেগম, মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খান মো. নাজমুস সোয়েব, হবিগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে ইশরাত, নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলে ইমরান রুহুল ইসলাম, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী রড়ুয়া, টঙ্গীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ কে এম গোলাম মোর্শেদ পাভেল, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ, হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মতিউর রহমান, হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং, নরসিংদীর রায়পুরার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান খন্দকার।

এ ছাড়া রয়েছেন- জামালপুর সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদা বেগম, কক্সবাজার চকরিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর হোসেন, কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলী নূর খান, কিশোরগঞ্জের ভৈরবের সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিমাদ্রী খীসা, ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (এনডিসি) অরুণ কৃষ্ণ পাল, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার তানিয়া তাবাসসুম, নরসিংদী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাখাওয়াৎ জামিল সৈকত, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মারুফা সুলতানা খান হীরামনি, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার শিবানী সরকার, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ফারজানা আকতার ও মো. কামরুল হাসান মারুফ।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান কাওসার, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আফিয়া আমিন পাপ্পা ও আমেনা বেগম, গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার নুসরাত জাহান, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আব্দুল মতিন খান, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, নরসিংদী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. ফয়জুর রহমান ও এ বি এম সারওয়ার রাব্বি, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. আমজাদ হোসেন ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার নাজমুন নাহার সুস্থ হয়েছেন।

যারা মারা গেছেন

দুদকের উপ-পরিচালক (উপসচিব) জালাল সাইফুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব শামসুল কিবরিয়া চৌধুরী, ও আ. রশিদ, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গৌতম আইচ সরকার, অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়া অতিরিক্ত সচিব মো. তৌফিকুল আলম, ইপিসিএস (ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস) কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী এবং সাবেক যুগ্মসচিব ইসহাক ভূঁইয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

শুক্রবার (২৯ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাসবিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে জানানো হয়, দেশে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে আরও ২৩ জন মারা যান। এতে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৮২ জনে। সবশেষ জানানো ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন দুই হাজার ৫২৩ জন, যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪২ হাজার ৮৪৪।

আরএমএম/জেডএ