প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়া ডিউটিতে যেতে বাধ্য করার অভিযোগ এনে দুই সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো বিক্ষোভ করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের কলকাতা পুলিশের সদস্যরা। শুক্রবার বিকেল থেকে দফায় দফায় চতুর্থ ব্যাটালিয়নের দফতর এবং ব্যারাকে বিক্ষোভ শুরু করেন পুলিশসদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা; যা গড়ায় রাতেও।
Advertisement
বিক্ষোভকারী পুলিশ সদস্যদের অভিযোগ, প্রয়োজনীয় সুরক্ষাসামগ্রী এবং সরঞ্জাম ছাড়াই তাদের ডিউটিতে পাঠানো হচ্ছে। যে কারণে তারা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ব্যাটালিয়ন দফতরের প্রধান গেট বন্ধ রেখে, ভেতরে আলো নিভিয়ে ভাঙচুর চালিয়েছেন বিক্ষুব্ধ পুলিশ সদস্যরা।
এর আগে কলকাতার পুলিশ ট্রেনিং স্কুল (পিটিএস) এবং গরফা থানায় একই অভিযোগ এনে বিক্ষোভ করেন পুলিশ সদস্যরা।
কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, শুক্রবার সকালে কলকাতার চতুর্থ ব্যাটালিয়নের এক পুলিশ সদস্যের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। ব্যাটালিয়নের ব্যারাক ছাড়াও রয়েছে কোয়াটারে পুলিশ সদস্যরা পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। সকাল থেকেই পুলিশকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ শুরু হয়।
Advertisement
তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন কনটেনমেন্ট জোনে তাদের ডিউটি করতে হচ্ছে। কিন্তু তাদেরকে মাস্ক, গ্লাভস বা পিপিইর মতো সুরক্ষা সরঞ্জাম দেয়া হচ্ছে না।
বিক্ষোভকারী এক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই এ সব নিয়ে আমাদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। কিন্তু তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে শুক্রবার দুপুরের পর থেকে। করোনা-আক্রান্ত পুলিশকর্মীর সংস্পর্শে আসা বাকি পুলিশকর্মীদের স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম মেনে কোয়রেন্টাইনে পাঠাতে অস্বীকার করেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অপর এক পুলিশ সদস্য বলেন, আমাদের কোয়ারেন্টানে না পাঠিয়ে ডিউটি দেয়া হয়। এর পরই ডিউটিতে যেতে অস্বীকার করেন পুলিশ সদস্যরা। কনস্টেবল এবং এএসআই পদমর্যাদার পুলিশকর্মীরা বিক্ষোভে শামিল হন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভে শামিল হন তাদের পরিবারের সদস্যরাও। বিকেল থেকেই বিক্ষোভকারীরা মারমুখী হতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারী পুলিশকর্মীদের একটা বড় অংশ, চতুর্থ ব্যাটালিয়নের ক্যাম্প চত্বরের আলো নিভিয়ে, কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে ভাঙচুর শুরু করেন। হাতে লাঠি, বাঁশ নিয়ে ক্যাম্পের কর্মকর্তাদের ধাওয়া করেন।
Advertisement
বিক্ষোভ-ভাঙচুরের খবর পেয়ে কলকাতা পুলিশের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ঢুকতে বাধা দেন বিক্ষোভকারীরা। ব্যারাকের ভেতর থেকে যুগ্ম কমিশনার এবং অতিরিক্ত কমিশনার পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে ইট-পাথর নিক্ষেপ করেন বিক্ষুব্ধ পুলিশ সদস্যরা। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিক্ষুব্ধদের একাংশকে শান্ত করেন শীর্ষ কর্মকর্তারা। বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু করেন তারা।
এসআইএস