গণপরিবহনের ভাড়ার বিষয়টি আগামীকাল ভাড়া নির্ধারণ বিষয়ক কমিটির সভায় চূড়ান্ত করা হবে।
Advertisement
শুক্রবার (২৯ মে) বিআরটিএর প্রধান কার্যালয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সীমিত আকারে গণপরিবহন চালুর নিমিত্তে পরিবহন মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনসহ অংশীজনদের নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভার শুরুতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দেন।
সভা শেষে সড়ক সচিব জানান, সীমিত পর্যায়ে গণপরিবহন চালানোর বিষয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব পর্যালোচনা করা হয়। পরে পরিবহন মালিক, শ্রমিক নেতাদের প্রস্তাব এবং বৈঠকে উপস্থিত সবার মতামতের ভিত্তিতে অর্ধেক সিট খালি রেখেই গাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়।
Advertisement
বৈঠকে গণপরিবহনে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা হলেও মালিকপক্ষের ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শনিবার বিআরটিএ ও বাসমালিক সমিতির বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
বৈঠকে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েত উল্লাহ বলেন, যাত্রী যেহেতু অর্ধেক নেয়া হবে, সে ক্ষেত্রে ভাড়া দ্বিগুণ করে দিলেই হল। এটা নিয়ে কালকে আবার আলাদা বৈঠকের দরকার কি?
এ বিষয়ে সচিব নজরুল ইসলাম বলেন, এই প্রস্তাব আমরা নিচ্ছি, তবে সিদ্ধান্ত কাল সকালেই হবে। কারণ যেহেতু একটি কমিটি আছে, আমরা তাদের মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত জানাব। গাড়ি ছাড়ার বিষয়ে ৩০ শতাংশের বিষয়টি কাজ করবে না, এটা কঠিন হবে।
মালিকরা পরিবহন শ্রমিকদের মাস্ক বিতরণ করলেও যাত্রীদের মাস্ক তাদের নিজেদেরই নিশ্চিত করতে হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।
Advertisement
গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে মেনে চলতে বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে সেগুলো হল-
>> স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
>> বাস টার্মিনালে কোনোভাবেই ভিড় করা যাবে না। তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রীরা গাড়ির লাইনে দাঁড়াবেন ও টিকেট কাটবেন।
>> স্টেশনে হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে।
>> বাসে কোনো যাত্রী দাঁড়িয়ে যেতে পারবে না।
>> বাসের সব আসনে যাত্রী নেয়া যাবে না। তবে পরিবারের সদস্য হলে পাশের আসনে বসানো যাবে।
>> যাত্রী, চালক, সহকারী, কাউন্টারের কর্মী সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
>> ট্রিপের শুরু ও শেষে বাধ্যতামূলকভাবে গাড়ির ভেতরসহ পুরো গাড়িতে জীবাণুনাশক স্প্রে করতে হবে।
>> যাত্রী উঠা-নামার সময় শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
>> চালক ও কন্ডাক্টরদের একটানা কাজ করানো যাবে না। তাদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিশ্রাম দিতে হবে।
>> মহাসড়কে চলাচলে পথে থামানো, চা-বিরতি পরিহার করতে পারলে ভালো।
>> যাত্রীদের হাতব্যাগ, মালামালে জীবাণুনাশক ছিটাতে হবে।
এ সময় অন্যান্যর মাঝে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাজাহান খান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা, মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ, বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. হাসানুল কবির, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রুস্তম আলী খান।এছাড়া অ্যাডিশনাল ডিআইজি পুলিশ হেডকোয়ার্টার মো. হায়দার আলী খানসহ মন্ত্রণালয় ও বিআরটিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এইউএ/এএইচ/জেআইএম