২০০৭ সালে ‘লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার’ প্রতিযোগিতায় প্রথম রানারআপ হন ফারিয়া শাহরিন। এরপর শুরু করেন শোবিজ যাত্রা। নাটক আর বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করে জনপ্রিয়তা পান। মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলালিংকের ‘কথা দিলাম’ প্যাকেজের বিজ্ঞাপনচিত্র তার পরিচিতি বাড়িয়ে দেয় অনেক গুণ।
Advertisement
অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রেও। মালয়েশিয়ার এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মিডিয়া মার্কেটিং বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। বর্তমানে তিনি অবস্থান করছেন বাংলাদেশে এবং করোনার প্রকোপ থেকে বাঁচতে বন্দী রয়েছেন গৃহেই। এভাবেই কেটেছে এবারের ঈদ।
সাম্প্রতিক দিনযাপন ও ব্যস্ততা নিয়ে ফারিয়া কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। লিখেছেন অরণ্য শোয়েব-
জাগো নিউজ : করোনার জন্য দীর্ঘ অবসরে সময় কাটছে কি করে?ফারিয়া : ঘর থেকে বের হইনি। সেই মার্চ মাস থেকেই বাসায় আছি। মাঝে দু একবার বের হয়েছিলাম সুপারশপে যাওয়ার জন্য। আমার আসলে খুব কম গুণ। অনেককেই দেখছি রান্নাবান্না বা বিভিন্ন আয়োজন করছেন ঘরবন্দি অবস্থায় থেকে। সেই তুলনায় আমি তেমন কিছু করিনি। আমার অবসরে বই পড়তে ভালো লাগে। প্রচুর বই পড়েছি। সিনেমা দেখছি।
Advertisement
আগে হয়তো একটি দেখতাম এখন চারটা পাঁচটা দেখছি৷ তাছাড়া প্রচুর ঘুমাই আমি। পাশাপাশি আম্মুকে একটু হেল্প করি। যেমন ঈদের আগের দিন পুরো বাড়িটা আমি পরিষ্কার করেছি। ঘর মুছেছি (হাসি দিয়ে)। যদিও মালয়েশিয়াতে আমাকেই বাসায় এই কাজ করতে হয়। সো অভিজ্ঞতা আছে।
জাগো নিউজ : এবারের ঈদ কেমন কাটলো ফারিয়া : অনেকের তুলনায় অনেক ভালো। কারণ দেশের যা অবস্থা, মানুষের মনের যা অবস্থা সে অনুযায়ী নিরাপদে, আনন্দে ঈদের দিন এসেছে। এদিকে আবার গুলশানের একটি হাসপাতালে আগুন লাগলো। আসলে এসব দেখে মেন্টালি স্ট্রং থাকটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমরা যে সুস্থ আছি ভালো আছি এর জন্য সৃষ্টিকর্তার দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া।
ঈদের দিন বাসায় ছিলাম। সবার সাথে সময় কেটেছে। বন্ধু এবং আত্মীয়দের সাথে ভিডিও-অডিও কলে কথা বলেছি। খোঁজ নিয়েছি। সময় চলে গেছে।
জাগো নিউজ : অন্য ঈদের চেয়ে এই ঈদে ব্যতিক্রম কি উপলব্দি হলো?ফারিয়া : এবারে তো সবারই ঘরবন্দি ঈদ কেটেছে। দেশের এই পরিস্থিতে ভালো থাকাটাই তো এখন মুশকিলের ব্যাপার। তারপরও ভালো আছি সবার দোয়াতে। এটা খোদার রহমত৷ এটা ব্যতিক্রমী এক উপলব্ধি আমার জন্য।
Advertisement
আরেকটি বিষয় হচ্ছে এবার ঈদের তেমন উৎসাহ ছিলো না। চাঁদ রাত বলে কিছু টের পাইনি। হাতে মেহেদী দেইনি। ঈদের কোনো শপিং ছিলো না।
জাগো নিউজ : এবারের ঈদে আপনার অভিনীত কয়টি নাটক এসেছে?ফারিয়া : আমি তো এমনি একটু কাজ কম করি। কারণ গল্প ভালো না লাগলে কাজ করি না। সবসময় গল্পের বিষয়টা প্রাধান্য দেই। আর এবারে তো যখন সবার কাজ করার কথা তখন ঘরে থাকতে হয়েছে। আমিও কাজ করিনি।মাত্র দুটো নাটকে কাজ করা হয়েছে। সেগুলো প্রচার হয়েছে।
জাগো নিউজ : এবার কী ঈদি পেয়েছেন?ফারিয়া : এবারে ঈদে আমি দুইশ টাকা সেলামি পেয়েছি।আমি আসলে টাকা জমাতে পছন্দ করি। আমার এটা ছোটবেলার অভ্যাস। দেখা যেত আগে সেলামির অর্ধেক টাকা রাখতাম আর অর্ধেক দিয়ে শপিং করতাম। তো এবারেও টাকাটা জমিয়ে রাখবো পরে খরচ করবো ভাবছি।
জাগো নিউজ :এই পরিস্থিতির মধ্যে শুটিং শুরু হলে আপনি করবেন?ফারিয়া : আসলে বাসায় থাকতে থাকতে টায়ার্ড হয়ে গেছি। তাই দুই একটা কাজ করলে খারাপ হতো না। আমার মনে হয় আরো একটু গ্যাপ দিয়ে শুরু করা উচিত। যদি প্রপারলি সব কিছু মেনে সোশ্যাল ডিসটেন্স রেখে কাজ করা যায় তাহলে ভালোই হয় হয়তো। জানিনা এমনটা সম্ভব কিনা। রোমান্টিক দৃশ্যের শুটিং করা যাবে না। এক্ষেত্রে কাছাকাছি আসা এবং কাছে এসে কথা বলা এমনটা যদি না হয় তাহলে ট্রাই করা যাবে।
জাগো নিউজ : বিস্কুটের একটি বিজ্ঞাপন করেছেন সম্প্রতি। কেমন প্রশংসা পাচ্ছেন?ফারিয়া : অনেক ভালো একটি কাজ ছিল এবং চমৎকার কনসেপ্ট ছিল। সবাই ভালো বলেছে। কেউ ফেসবুকে অথবা মেসেজে জানিয়েছে। এর মধ্যে মিলিয়ন ভিউ পার করেছে এটি। এই পরিস্থিতে এমন ইমোশনাল একটি ভিডিও সবাইকে আকৃষ্ট করেছে।
জাগো নিউজ স্পেশাল :১/ অভিনয় করে প্রথম কত টাকা পেয়েছিলেন?উত্তর : আসলে মনে পড়ছে না এখন। একটু চিন্তা করতে হবে। মনে পড়লে জানাবো। আর টাকাটা আম্মুকে দিয়ে দিছিলাম।
২/ বিয়ে করবেন কবে ?উত্তর : (হাসি দিয়ে) দেশের যা অবস্থা তাতে কি করে বিয়ের পিঁড়িতে বসবো? আমার এক কাজিনের বিয়ে হয়েছে মার্চের শুরুতে। তখনই আমার পরিবার একদম প্রস্তুতি নিয়েছিল যে বিয়েটা খুব তাড়াতাড়ি করাবে। আর এরমধ্যে এই অবস্থা যদিও আমি চাইতাম না বিয়ে শাদী করতে কিন্তু হলো ভালোই হতো। যদি বিয়েটা করতাম কারণ এটলিস্ট ঝগড়া করতে পারতাম। আব্বু আম্মুর বকা শুনতে হতো না। হা হা হা। দেখি সব পরিস্থিতি ঠিক হোক তারপরে।
এলএ/জেআইএম