আন্তর্জাতিক

করোনা বিনাশে মন্দিরে ‘নরবলি’ দিলেন পুরোহিত

মহামারী করোনাভাইরাসের বিনাশে দেবতাকে তুষ্ট করার আদেশ পেয়েছিলেন স্বপ্নে। করোনা ধ্বংসে ভারতের ওডিশ্যা প্রদেশের এক পুরোহিত এই স্বপ্নপূরণ করলেন নরবলি দিয়ে।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, স্বপ্নে পাওয়া আদেশ অনুযায়ী মন্দিরের ভেতরেই কুড়াল দিয়ে এক ব্যক্তির মাথা বিচ্ছিন্ন করে বলি দিয়েছেন ওই পুরোহিত। ওডিশ্যা কটকে স্থানীয় একটি মন্দিরের বৃদ্ধ এক পুরোহিতের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার পর তাকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ওডিশ্যা পুলিশ বলছে, বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটেছে নরসিংহপুর থানা এলাকার বাঁধহুদা গ্রামের কাছের একটি মন্দিরে। ওই মন্দিরের ৭২ বছরের পুরোহিত সংসারী ওঝার বিরুদ্ধে স্থানীয় এক ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলেছেন, বলির শিকার ব্যক্তির নাম সরোজ কুমার প্রধান (৫২)।

পুলিশের দাবি, সকালে থানায় এসে আত্মসমর্পণ করে বলিদানের কথা স্বীকার করেছেন সংসারী ওঝা। তবে তদন্তকারীদের কাছে তার দাবি, করোনাভাইরাসকে বিনাশ করতে মন্দিরের দেবীর কাছ থেকে নরবলির স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন তিনি। সেই নির্দেশ মেনেই সরোজকে বলি দিয়েছেন। তবে এই স্বীকারোক্তি মানতে নারাজ এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

তাদের বলছেন, সরোজের সঙ্গে ওই গ্রামের একটি আমবাগান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ ছিল ওই পুরোহিতের। পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে।

তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলেছেন, বুধবার রাতে সরোজের সঙ্গে নরবলি নিয়েই বাক-বিতণ্ডা হয় বলে জানিয়েছেন সংসারী ওঝা। তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে কুড়াল দিয়ে সরোজের মাথায় আঘাত করেন তিনি। সেখানেই লুটিয়ে পড়েন সরোজ। পরে সকালের দিকে পুলিশের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন এই পুরোহিত।

কটক পুলিশের ডিআইজি আশিস কুমার সিংহ বলেছেন, সরোজের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সময় ওই পুরোহিত মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। পরের দিন সকালে চেতনা ফিরলে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। খুনের কথাও স্বীকার করেছেন সংসারী।

এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সমাজকর্মী সত্যপ্রকাশ পতি বলেন, ‘একবিংশ শতকেও যে মানুষ এ ধরনের বর্বর কাজে বিশ্বাস করে, তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। দোষীর কড়া শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

Advertisement

এসআইএস/এমকেএইচ