দেশজুড়ে

ভৈরবে ডিবির পোশাকে তারা কারা!

ডিবির পরিচয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে ভৈরব থানায়। ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। এদিন তার ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা ছিনতাই হয়।এদিকে ডিবির পরিচয়ে গত ৪ দিনের ব্যবধানে দুটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে ভৈরবে। ছিনতাইকারীরা দুটি ঘটনায় ৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিরাপদে পালিয়ে গেলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে গত সোমবারের ঘটনায় ব্যবহৃত একটি নোহা মাইক্রোবাস (নং- ঢাকা মেট্রো চ-১১-৫৯৭৭) পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ডিবির পরিচয়ে এরা কারা? ছিনতাই করার সময় তাদের হাতে থাকে ওয়াকিটকি, পিস্তল ও হ্যান্ডকাপ। এ গ্রুপের সংখ্যা ৪/৫ জন। তাদের গায়ে শার্টের উপরে ডিবি লেখা ড্রেস। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ভৈরব শহরের জগন্নাথপুর এলাকার ব্যবসায়ী মো. বিল­াল হোসেনকে পিস্তল ধরে হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে তাদের গাড়িতে উঠিয়ে নেয়। পরে এসব ডিবির পরিচয়ধারীরা তার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তাকে নরসিংদীর রায়পুরা মরজাল নামক স্থানে গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। গত সোমবারও ডিবির পরিচয়ে একইভাবে একটি ঘটনা ঘটে। সোমবারের ঘটনাও ছিনতাইকারীরা এ ঘটনা ঘটায় বলে জানায় ভূক্তভোগী কুতুবউদ্দিন শাহ। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, এ জেলার কোনো ডিবির সদস্য এ ঘটনা ঘটায়নি। তিনি বলেন, যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তারা প্রতারক দলের সদস্য হতে পারে। ভৈরবে এ ধরনের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। এ দুটি ঘটনায় এখানকার ব্যবসায়ীসহ সব মানুষই এখন আতঙ্কে রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে ঘটনার পেছনে আরো কোনো রহস্য থাকতে পারে। জনমনে প্রশ্ন ব্যাংক থেকে গ্রাহকরা টাকা উত্তোলন করে তাদের বাসায় বা অফিসে যাবে এ খবরটি ছিনতাইকারীরা কিভাবে জানে। পথিমধ্যে কথিত ডিবির সদস্যরা হঠাৎ করে সাধারণ লোকদের গাড়ি গতিরোধ করে তাদেরকে বলে তোর নামে মামলা আছে বা তোদের কাছে জাল টাকা আছে তাই থানায় চল। মনে হচ্ছে ছিনতাইকারী দলটি অনেক শক্তিশালী। প্রকাশ্যে দিবালোকে অনেক মানুষের সামনে তারা এ ঘটনা ঘটিয়ে গেলেও প্রত্যক্ষদর্শী লোকজন ডিবির লোক ভেবে কেউ এগিয়ে আসে না। ফলে প্রতারক দলের সদস্যরা নিরাপদে ছিনতাই করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। গত বৃহস্পতিবার ঘটনার পর পুলিশ তৎপর হলে সোমবারের ঘটনাটি ঘটতো না বলে অনেকে মনে করেন। তারা ডিবির কোনো সদস্য নয় পুলিশ এ বক্তব্য দিয়েই পার হয়ে যায়। ঘটনার তদন্ত করে এ রহস্য উদঘাটন করতে হবে। সোমবার মাইক্রোবাসটি আটকের পর অপরাধী সনাক্তে পুলিশ তৎপর হলেই এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন হতে পারে। তা না হলে ভবিষ্যতে ভৈরবসহ আরো অনেক এলাকায় এ ধরনের ঘটনা আরো ঘটতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছে। ভৈরবে ইদানিং আইন শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি হয়েছে। গত ঈদের পর মেঘনা পারে ৭ জন দর্শনার্থীকে ছিনতাইকারীরা আহত করেছে। এছাড়া শহরে প্রায়ই চুরি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধের ঘটনা ঘটলেও পুলিশের ভূমিকা নীরব। মাঝে মধ্যে কিছু কিছু ঘটনায় ইয়াবা, ফেনসিডিল উদ্ধার ছাড়া পুলিশের আর বড় ধরনের কোনো অভিযান নেই। ভৈরব থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. বদরুল আলম তালুকদার এ প্রতিনিধিকে বলেন, ভৈরবের আইন শৃঙ্খলা অনেকটা ভালো। অথচ তিনি কর্মস্থলে থাকাবস্থায় ডিবির পরিচয়ে এ ঘটনাগুলি ঘটল। পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দুটি ছিনতাইয়ের ঘটনা তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন বলে অনেকে মনে করছেন। আসাদুজ্জামান ফারুক/এমএএস/আরআইপি

Advertisement