দেশজুড়ে

সাতক্ষীরায় আম্ফানে বেড়েছে করোনার ভয়

সাতক্ষীরায় দিনেদিনে বেড়েই চলেছে করোনার সংক্রমণ। কয়েকদিনের ব্যবধানে জেলাটিতে এখন শনাক্তের সংখ্যা ৩৪ পৌঁছেছে। গত ১৬ মে পর্যন্ত করোনা পজিটিভ রোগী ছিল মাত্র দুই জনে। অথচ কয়েকদিনের ব্যবধানে এখন পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ৩৪ জনে। স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, আম্ফানের পরে ঝুঁকি আরও বেড়েছে।

Advertisement

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত জানান, জেলায় করোনা পজিটিভ আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৩৪ জন। যা কয়েকদিন আগেও হাতেগোনা কয়েকজনে ছিল। আম্ফানের পর ঝুঁকি আরও বেড়েছে। কেননা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হয়নি। যার কারণে আমরা খুব ভয়ে আছি সাতক্ষীরায় করোনা পরিস্থিতি কি হতে যাচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যবিভাগ সতর্ক রয়েছে।

তিনি বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, জেলায় নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে ৭৩৩ জনের। রিপোর্ট হাতে পাওয়া গেছে ৫৩৩ জনের।

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের করোনা বিষয়ক মুখপাত্র ডা. জয়ন্ত কুমার জানান, শনাক্ত হওয়া পজিটিভ করোনা আক্রান্তের ৩৪ জনের মধ্যে ইতোমধ্যে তিনজন সুস্থ হয়েছেন। বাকি ৩১ জন হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন। বিভিন্ন উপজেলায় শতাধিক ঘরবাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।

Advertisement

করোনা পজিটিভ রোগী থাকায় সাতক্ষীরা সদর, আশাশুনি, শ্যামনগর, কলারোয়া ও দেবহাটা উপজেলার শতাধিক ঘরবাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নকে পুরোপুরি লকডাউন করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এছাড়া জেলায় ইতোমধ্যে করোনার উপসর্গ নিয়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যুর পর সাত রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করা দুইজনের রিপোর্ট এখনও হাতে পায়নি সাতক্ষীরার স্বাস্থ্য বিভাগ।

জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, আম্ফান তাণ্ডবে জেলার ১৯০৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে তিন লাখ ৭০ হাজার ২৬৪ জন মানুষ আশ্রয় নেয়।সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল জানিয়েছিলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণ করবে মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের অবদা বাঁধ ও বিভিন্ন সাইক্লোন শেল্টারে বর্তমানে আশ্রিত রয়েছে ১৫-১৬ হাজার মানুষ। তবে কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানে না বলে জানান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল।

তিনি বলেন, আশ্রয়কেন্দ্র বা বিভিন্ন জায়গায় যারা আশ্রিত রয়েছেন কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। আমরা প্রচারণা করেছি তবে কেউ শোনেনি। সবাই মিলেমিশে এক সাথে রয়েছে। চারদিক পানিবন্দি। একই চিত্র জেলার উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে।

Advertisement

সবাই মিলেমিশে রয়েছেন একসাথে। তবে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম আবুজর গিফারী বলেন, শ্যামনগর উপজেলায় বর্তমানে দেড়শ পরিবার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত রয়েছে। বাকিরা নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেছে। উপজেলায় ৬০ হাজার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তারা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ছিল। করোনার বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা কাজ করেছি।

সার্বিক বিষয়ে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো.হুসাইন সাফায়াত বলেন, আম্ফান পরিস্থিতিতে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হয়নি। যার কারণে আমরা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছি। করোনার ভয় বেড়েছে।

আকরামুল ইসলাম/এমআরএম