করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পুরো পৃথিবী একটি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এরই মাঝে পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। দীর্ঘদিন কর্মহীন থাকায় দেশের মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারগুলো আছে তীব্র খাদ্য সংকটে। ঈদ তাদের কাছে এবার আর খুশির বার্তা আনেনি।
Advertisement
শহরের পথশিশুদের অবস্থা আরও শোচনীয়। প্রতি বছর বিভিন্ন সংগঠন ঈদে পোশাক দিলেও এ বছর কিছুই পায়নি তারা। রাস্তাঘাটে মানুষ না থাকায় ঈদে কী খাবে, সেই নিশ্চয়তাও ছিল না। সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুর কথা ভেবে সম্ভাবনা ইয়থ ফর বাংলাদেশের একদল স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ঠিক করলেন এবার ঈদে নিজেদের জন্য কিছু নয়, ঈদের খরচ বাঁচিয়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মুখে তুলে দেবেন এক বেলা ভালো খাবার। পোলাও, মুরগির রোস্ট, ডিম, মিষ্টান্ন ও পানি।
সম্ভাবনার আয়োজনে ঈদের দিন শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মিরপুর ১২, পল্লবী, কালশী গুদারাঘাট বস্তির ৫০০ পথশিশু, বস্তির সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে এসব খাবার।
এ সম্পর্কে সম্ভাবনার স্বেচ্ছাসেবকরা জানান, রমজানজুড়ে আমরা ইফতার বিতরণ করেছি প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষের মাঝে। মানুষগুলোর সাথে আমাদের এক আত্মীয়তার বন্ধন তৈরি হয়েছে। তাদের কষ্টের কথা আমাদের কাছে বলত। আমরা প্রতিটি মানুষের হাড়ির খবর জানি। অধিকাংশ মানুষের ঈদে ভালো খাওয়ার সামর্থ্য নেই। পথশিশুদের অবস্থা আরও শোচনীয়। প্রতি ঈদের মতো এবারের ঈদ নয়। দোকানপাট সীমিত আকারে খোলা, ঈদের নতুর পোশাক যেন স্বপ্ন। বরং ঈদের দিনে খেতে পারবে কি-না, তার নিশ্চয়তা নেই। তাই এবার ঈদে আমরা সবাই মিলে পরিকল্পনা করি ওদের নিয়ে ঈদ পালন করার।
Advertisement
উল্লেখ্য, করোনা সংকটের প্রথমদিন থেকে সম্ভাবনা ৪০০০ হাজারের অধিক মানুষের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। এর মাধ্যমে ১০২৫টি পরিবার উপকৃত হয়েছে পাশাপাশি রমজানে প্রতিদিন মিরপুরে ২০০ এর অধিক মানুষকে ইফতার দেয়া হয়েছে। পুরো কাজটি করেছে সম্ভাবনা ইয়থ ফর বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবীরা।
সম্ভাবনার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এবং বিতরণ কার্যক্রমের পরিচালক আরিফুল ইসলাম বলেন, দেশের এই ক্রান্তিকালে আমাদের তরুণরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। পাশাপাশি নিজেদের খুশি ভাগ করে নিচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সঙ্গে। এত এত খারাপ সংবাদের ভিড়ে এটি একটি আশা জাগানিয়া সংবাদ।
এমএআর/এমএস
Advertisement