জাতীয়

রোজগারের আশায় পেশা বদলেছেন ফুল বিক্রেতা আফসানা

মঙ্গলবার সকাল ৮টা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের অদূরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশ গেটের সামনে ইট দিয়ে তৈরি চুলায় কেটলি বসিয়ে পানি গরম করছিলেন মধ্যবয়সী এক নারী। কোমল পানীয়ের বোতল থেকে কেরোসিন ঢেলে গাছের টুকরো জ্বালিয়ে তাপ দিচ্ছিলেন। পানি গরম হওয়ার পর তাতে চায়ের পাতা ও দুধ চিনি ঢেলে দিলেন। চা বানানো শেষ হলে কেটলি থেকে তা ঢেলে রাখা হলো চুলার পাশে রাখা ফ্লাস্কে। এমন সময় ছোট্ট এক শিশু ছুটে এসে বলতে শোনা যায়, 'নানি খিদা লাগছে, কি খামু।' এ প্রশ্নের জবাবে ওই নারী উত্তর দেয়, 'আগে চা বেইচা কিছু টাকা পাইলি না কিছু কিন্না খাওয়ামু।'

Advertisement

মধ্যবয়স্ক নারীর নাম আফসানা বেগম। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশে মেয়ে ও নাতনিকে নিয়ে থাকেন। আগে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে শাহবাগের ফুলের মার্কেট থেকে অল্প খরচে ফুল কিনে উদ্যানের ভেতরে বিক্রি করতেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুই মাসেরও বেশি সময় উদ্যান বন্ধ। করোনা সংক্রমণের ভয়ে লোকজনও এদিকে আসেন না। ফুলের মার্কেট বন্ধ রয়েছে। এ কারণে আফসানা বেগম পেশা বদলে ফেলেছেন। ঈদের আগে মার্কেট থেকে নতুন চায়ের ফ্লাস্ক, চা পাতা, চিনি ও দুধ কিনে ঈদের দিন থেকে চা বিক্রি শুরু করেছেন।

তিনি জানান, গতকাল (ঈদের দিন) থেকে টিএসসিতে লোকজনের আনাগোনা বেড়েছে। গতকাল বেশ ভালোই বিক্রি হয়েছে। আর তাই আজ সকাল থেকেই চা তৈরি করছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে হয়তো আবার ফুল বিক্রিতে ফিরে যাবেন বলে জানান আফসানা।

তিনি বলেন, গত দুইটা মাস আয়-রোজগার না থাকায় খুব কষ্টে দিন কেটেছে। কোনদিন ত্রাণসামগ্রী কিংবা আর্থিক সাহায্য পেয়েছি আবার কোনেদিন পাননি। লোকজ‌নের আনাগোনা বাড়‌তে শুরু করায় চা বি‌ক্রি‌তে নেমে‌ছেন ব‌লে জানান তিনি।

Advertisement

এমইউ/এএইচ/জেআইএম