রাজধানীতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর মতো বিনোদনকেন্দ্র নেই বললেই চলে। যে কোনো ছুটি কিংবা উৎসবে নগরের বাসিন্দারা তাই একটুখানি বিনোদনের জন্য যেসব স্থানে ছুটে যান তার মধ্যে অন্যতম সংসদ ভবন এলাকা, চন্দ্রিমা উদ্যান ও হাতিরঝিল। তবে বর্তমানে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার সংসদ ভবন, চন্দ্রিমা উদ্যান কিংবা হাতিরঝিলে মানুষজনের উপস্থিতি কম হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র।
Advertisement
আজ সোমবার (২৫ মে) বিকেলে সরেজমিনে স্পটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও প্যাডেল চালিত অটোরিকশা নিয়ে অসংখ্য মানুষ ঘুরতে এসেছেন এসব এলাকায়। তবে সংক্রমণ এড়াতে মুখে মাস্ক পরেছেন প্রায় সবাই। সংসদ ভবন এলাকায় টিকেট করে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে ঘুরছেন অনেকে। কেউ কেউ দল বেঁধে দাঁড়িয়ে ও বসে গল্পগুজব করছিলেন। কেউবা ব্যস্ত ছিলেন সেলফি তোলায়।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও চন্দ্রিমা উদ্যানের দুপাশের রাস্তার পাশে সবুজ গাছপালা আর কৃষ্ণচূড়া গাছে গাছে ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে অনেকেই পরিবার-পরিজনসহ ছুটে এসেছেন। তবে অন্যান্য ঈদে যেমন সবাই আনন্দ, হাসি-খুশিতে মাতোয়ারা থাকেন, এবার তাদের মধ্যে সেই উৎসাহ, উদ্দীপনা বা হাসিখুশি দেখা যায়নি।
ঘুরতে আসা কয়েকজন বলছিলেন, পরিবার নিয়ে ঘোরাঘুরির মতো উল্লেখযোগ্য জায়গা নেই। সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ শপিংমল বসুন্ধরা সিটি ও যমুনা ফিউচার পার্ক বন্ধ, ফলে সেখানকার বিনোদন রাইডগুলোতেও চড়ার সুযোগ থাকছে না। তাই করোনার ভয় থাকলেও সন্তান বা প্রিয়জনকে নিয়ে এসব এলাকায় ঘুরতে বেরিয়েছেন তারা।
Advertisement
সংসদ ভবনের পাশে ঘোড়ার গাড়িতে দুই সন্তানকে ঘুরিয়ে আনার পর পকেট থেকে জীবাণুনাশক স্যানিটাইজার বের করে দুই সন্তানের হাতে ঢেলে দেন রফিকুল নামে এক ব্যক্তি।
মোহাম্মদপুরের এই বাসিন্দা জানান, গত দুই মাসেরও বেশি সময় যাবত স্কুল বন্ধ এবং ঘরবন্দী থাকা শিশুরা একদম মনমরা হয়ে পড়েছিল। তাদের একটু চাঙ্গা করতে মুখে মাস্ক পরিয়ে এখানে ঘোরাতে নিয়ে এসেছেন।
হাতিরঝিল ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের ছুটির সেই উপচেপড়া ভিড় না থাকলেও একেবারে কম উপস্থিতি নেই। বেশিরভাগ মানুষই হাতিরঝিলের ফুটপাত ধরে হাঁটাহাঁটি করছিলেন। অনেকেই হাতিরঝিলের স্বচ্ছ নীলাভ পানি দেখে বলাবলি করছিলেন, করোনার কারণে পরিবেশের উন্নতি হয়েছে। হাতিরঝিলে এমন স্বচ্ছ নীলাভ জল যে কাউকেই মায়ায় ফেলবে—বলছিলেন কেউ কেউ।
এমইউ/এইচএ/পিআর
Advertisement