জাতীয়

একদিনেই শনাক্ত প্রায় দুই হাজার, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল পাঁচশ’

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২১ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ৫০১ জন মারা গেলেন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ৯৭৫ জন। এটি একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। ফলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৫৮৫ জনে।

Advertisement

সোমবার (২৫ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। এসময় উপস্থিত ছিলেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প‌রিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. সা‌নিয়া তহ‌মিনা, প‌রিচালক (প‌রিকল্পনা ও গ‌বেষণা) ডা. ইকবাল কবীর প্রমুখ।

তিনি নতুন একটিসহ মোট ৪৮টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১১ হাজার ৫৪১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় নয় হাজার ৪৫১টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো দুই লাখ ৫৩ হাজার ৩৪টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও এক হাজার ৯৭৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এটি একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৫৮৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ২১ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫০১ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৪৩৩ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল সাত হাজার ৩৩৪ জনে।

নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের ১৬ জন পুরুষ, পাঁচজন নারী। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের নয়জন ও রংপুর বিভাগের একজন রয়েছেন। বয়সের দিক থেকে ১১ থেকে ২০ বছরের একজন, চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব নয়জন, ষাটোর্ধ্ব চারজন, সত্তরোর্ধ্ব দুজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের দুজন রয়েছেন।

Advertisement

গত রোববারের (২৪ মে) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ জন মারা গেছেন। যা একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। আট হাজার ৯০৯টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৫৩২ জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু কমলেও হয়েছে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এর আগে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের রেকর্ড ছিল এক হাজার ৮৭৩ জনের, যা গত ২৩ মের বুলেটিনে জানানো হয়

সোমবারের বুলেটিনে বলা হয়, করোনা রোগী শনাক্ত বিবেচনায় এখন পর্যন্ত সুস্থতার হার ২০ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪১ শতাংশ।

ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ২৮৪ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন চার হাজার ৬৫৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯৫ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ২৫৮ জন।

সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে আছে ছয় হাজার ৩৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা আছে ৩৯৯টি, ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০৬টি।

Advertisement

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৩৮৪ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার ৮৬৩জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ১১২ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ১০ হাজার ৪৫৮ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৫ হাজার ৪০৫ জন।

দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৬টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৮৪০ জনকে।

বুলেটিনে বরাবরের মতোই করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।

চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ লাখ ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষ। মৃতের সংখ্যা তিন লাখ ৪৭ হাজার প্রায়। তবে সাড়ে ২৩ লাখের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ।

পিডি/এমইউ/এইচএ/এমএস