রাজধানীর আজিমপুর নতুন পল্টন লাইনের আল হেরা জামে মসজিদ থেকে ঈদের নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে একে একে বেরিয়ে আসছিলেন মুসল্লিরা। তাদের অধিকাংশের মুখেই ছিল মাস্ক ও হাতে জায়নামাজ। তবে কারো মুখে রা নেই। মসজিদ থেকে রাস্তায় বেরিয়ে সবাই যার যার বাসার দিকে হেঁটে গেলেন।
Advertisement
অন্যান্য বছর ঈদের নামাজ শেষে এমন চিত্র ছিল অকল্পনীয়। সারা মাস রোজা শেষে কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে মসজিদে ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হতো। ছোট্ট শিশুদের নতুন জামা-কাপড় পরিয়ে পরিবারের কর্তাব্যক্তি তাদের সঙ্গে নিয়ে মসজিদে নামাজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়তেন। গোটা মসজিদ ধরে অন্যরকম একটা আনন্দমুখর পরিবেশ বিরাজ করত। নামাজ শেষে ছোট-বড় সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অর্থাৎ কোলাকুলি হতো। বাসায় যাওয়ার আগ পর্যন্ত রাস্তায় পরিচিত যার সঙ্গে দেখা হতো তার সঙ্গে কোলাকুলি ও বাসায় যাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ দেয়া হতো।
কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে ঈদের আনন্দ বিবর্ণ হয়ে গেছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নির্দিষ্ট দূরত্বে জায়নামাজ পেতে খুতবা শোনেন এবং নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। নামাজ শেষে মোনাজাতে মুসল্লিরা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দুহাত তুলে ক্ষমা প্রার্থনা ও দোয়া করেন।
সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ শামসুদ্দিন আহমেদ। বয়সের ভারে ন্যুজ হলেও ছেলে ও নাতির হাত ধরে মসজিদে নামাজ পড়তে এসেছেন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, তার এ বয়সে ঈদের জামাতের শেষে মসজিদ থেকে এমন চুপচাপ মুসল্লিদের বেরিয়ে যেতে দেখেননি কখনও। নামাজ শেষে কোলাকুলি করায দিয়েই ঈদের আনন্দ শুরু হতো বলে জানান তিনি।
Advertisement
রাজধানীর শাহজাহানপুরের বাসিন্দা ১০ বছরের ছোট্ট শিশু গাজী আহনাফ আরাবির মন খারাপ। বড় ভাইকে নিয়ে তার বাবা স্থানীয় মসজিদে ঈদের নামাজ পড়তে গেলেও করোনা সংক্রমণের ভয়ে তাকে সঙ্গে নেননি।
তার মা নাসরিন আক্তার বলেন, ঘরে বন্দী থাকতে থাকতে শিশুরা কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে। এমন বিবর্ণ ঈদ আগে কখনও দেখেননি বলে জানান তিনি।
এমইউ/এসআর/এমএস
Advertisement