পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় এমপি ও মেয়র গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুপক্ষের প্রায় ১৫ জন। রোববার (২৪ মে) দুপুরে পৌর শহরে থানার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
Advertisement
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১টায় পৌর শহরের জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর সামনে বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউল হক জুয়েলের পক্ষে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রচারের জন্য একটি তোরণ নির্মাণ করা হচ্ছিল। এসময় এমপি আ স ম ফিরোজ গ্রুপের পৌর শাখার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও নাজিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক তার দলবল নিয়ে তোরণ নির্মাণে বাধা দেন।
খবর পেয়ে মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় জুয়েল এবং ফারুকের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এতে দুপক্ষের নেতাকর্মীরা মারমুখী হয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হয়। দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়। এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে খবর পেয়ে ওই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন, বাউফল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেনের মধ্যস্থতায় জুয়েল ও ফারুককে নিয়ে ওসির রুমে সমজোতার সভা চলছিল।
এদিকে খবর পেয়ে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কালাইয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির মোল্লা আড়াই কিলোমিটার দূরে কালাইয়া থেকে আসেন। তিনি প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন অনুগত লোকজন নিয়ে ফারুকের পক্ষে থানার সামনে এসে জড়ো হন এবং স্লোগান দেন।
Advertisement
একপর্যায়ে তারা নির্মাণাধীন তোরণের বাঁশ ও খুঁটি উপরে ফেলেন। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে মেয়র গ্রুপের কর্মীরা এমপি গ্রুপকে ধাওয়া করলে তারা ডাকবাংলোর মধ্যে আশ্রয় নেয়। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
এসময় এমপি গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মী তাপস দাস ছুরিকাহত হয়ে গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে বাউফল এবং পরে শেবাচিমে পাঠানো হয় এবং সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাপস মারা যান।
কয়েক দফার সংর্ঘষে দুপক্ষের ১৫ জন আহত হন। বর্তমানে দুগ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এমপি সমর্থিত পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।
Advertisement
এ ব্যাপারে বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউল হক জুয়েল বলেন, শহরের পরিবেশ অশান্ত করতেই ইব্রাহিম ফারুকের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সম্বলিত করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে তোরণ নির্মাণকালে বাধা দেয়া হয় এবং তোরণের মালামাল ভাঙচুর করা হয়। পুরো ঘটনার জন্য এমপি আ স ম ফিরোজ সাহেবের অসুস্থ এবং অশান্ত রাজনীতি দায়ী। আমি ঘটনা তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীর শাস্তি দাবি করছি।
বাউফল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাপস মারা গেছেন। ইতোমধ্যে আাসমি গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তৎপর।
মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এমএএস/এমএস