করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ মোকাবিলায় দেশে টানা ৬৬ দিনের ছুটি চলছে। আগামী ৩০ মে শেষ হচ্ছে এ সাধারণ ছুটি। টানা ছুটির কারণে ইতিমধ্যে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা নেমেছে। কর্মহীন হয়ে বিপাকে পড়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। করোনা পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার পথেই হাঁটছে সরকার। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে কাজে ফেরাতে চান দেশের নীতিনির্ধারকরা। ফলে ৩০ মে-র পর ছুটি আর নাও বাড়তে পারে। এতে এখানেই অবসান ঘটতে পারে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে লম্বা এ সাধারণ ছুটি।
Advertisement
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমন ইঙ্গিতই পাওয়া গেছে। ছুটি বাড়বে নাকি অফিস-আদালত খুলে দেয়া হবে- সেই বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন। এদিকে রোববার (২৪ মে) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণে যদি ছুটির বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু নাও উল্লেখ করেন তবে আগামী ২৮ মে’র দিকে হয়তো তার সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
সোমবার (২৫ মে) দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। ছুটি ফের বাড়বে কি না- জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন রোববার (২৪ মে) দুপুরে জাগো নিউজকে বলেন, ‘আজকে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। সেখান থেকে হয়তো পরিস্থিতি কিছুটা আঁচ (আন্দাজ) করা যেতে পারে। অথবা আগামী ২৮ মে’র দিকে আমরা হয়তো প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত জানতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘ছুটি বাড়বে নাকি সব খুলে দেয়া হবে, সেটা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত দেয়ার পরই জানা যাবে।’
Advertisement
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ধরা পড়ে। পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যেতে থাকলে প্রাথমিকভাবে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় ছুটি বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি থাকবে। তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিও ক্রম অবনতিশীল।
ছুটির সঙ্গে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহনও। কিছুদিন ধরে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিলতা এসেছে। সীমিত আকারে খুলে দেয়া হয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস এবং শপিংমল।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘করোনা যদি না কমে, তবে কী ছয় মাস এক বছর লকডাউন দিয়ে বসে থাকতে হবে। তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা কী? বিকল্প ব্যবস্থা হচ্ছে মুখে মাস্ক ব্যবহার করে, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাই বাইরে বের হবে, বাসায় থাকবে। কিছু দরকার নেই মনে হয়।’
তিনি বলেন, ‘বাঁচতে চাইলে আপনার সুরক্ষা আপনাকেই নিতে হবে। আপনার সামনে যেই দাঁড়াবে, মনে করবেন তার করোনাভাইরাস আছে, আপনাকে মরিয়া হয়ে তার কাছ থেকে বাঁচতে হবে। আমাদেরই সচেতন হয়ে দেশ বাঁচাতে হবে।’
Advertisement
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘প্রতিদিন আমেরিকায় ২ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, কিন্তু তারা সব খুলে দিয়েছে। তাদের অবস্থা যদি এমন হয় তবে আমরা কোন পথে। সরকার এভাবে চিন্তা-ভাবনা করছে।’
আরএমএম/এফআর/এমএস