রাজধানীর শাহবাগে জ্বালানি তেল বিক্রয়কারী সরকারি প্রতিষ্ঠান মেঘনা মডেল সার্ভিস সেন্টারের মধ্যবয়সী কর্মচারী শাহ আলম। চাকরি জীবনের প্রায় তিন দশক কেটে গেছে তার। গ্রীষ্মের কাঠফাটা গরমে আপদমস্তক ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) পরে দায়িত্ব পালন করছেন। এসব পোশাক পরে গরম লাগলেও কিছুই করার নেই তার।
Advertisement
কর্মরত অবস্থায় সারাক্ষণই বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের পেট্রল, অকটেন, ডিজেল ও মবিল বিক্রি করতে হয় তাকে। যারা জ্বালানি তেল নিতে আসেন তাদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে বললে অনেক সময় ভিড় জমে গেলে তা মানা সম্ভব হয় না। তাই প্রতিদিন শত শত মানুষের সংস্পর্শে আসার ফলে সংক্রমিত হওয়ার ভয় তাড়া করে শাহ আলমকে।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, করোনার ভয় তো করেই, কিন্তু চাকরিও তো করতে হবে। তাই পিপিই পরে সতর্ক হয়ে তেল সরবরাহ করি। আর বাকিটুকু আল্লার ইচ্ছা।
দেখা গেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি পেট্রলপাম্পে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় চলাচলকারী শত শত যানবাহনে জ্বালানি তেল সরবরাহ করে চলেছেন।
Advertisement
সরেজমিনে দেখা গেছে, সরকারি পেট্রলপাম্পগুলোতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী পরে জ্বালানি তেল সরবরাহ করলেও অধিকাংশ বেসরকারি পেট্রলপাম্পে কর্মরতদের শুধু মুখের মাস্ক-ই ভরসা। কোথাও কোথাও ন্যূনতম মাস্ক পরিধান করছেন না কেউ কেউ। ফলে তাদের মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
বিভিন্ন পেট্রলপাম্পে বিশেষত বড় বড় প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে জ্বালানি তেল বিক্রির জন্য নির্ধারিত স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হলেও অসচেতন অনেক গ্রাহক তা মানছেন না। তারা আগের মতোই কাছাকাছি দূরত্বে যানবাহন রেখে জ্বালানি তেল নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পেট্রলপাম্পের কর্মচারী জানান, অসচেতন গ্রাহকদের সঙ্গে এ নিয়ে অনেক সময় বাকবিতণ্ডা হচ্ছে।
তারা জানান, পিপিই পরে কাজ করলেও প্রতিদিনই মনে হয় এই বুঝি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। এখন প্রাণ বাঁচাতে শুধু একটি পিপিই ভরসা। তাই কাজ শেষে প্রতিদিন ধুয়ে পরদিন সেটি পরেই কাজে আসতে হচ্ছে তাদের।
Advertisement
এমইউ/বিএ/পিআর