সবার জানা, এমনিতেই তার মানবতাবোধ প্রবল। অসহায়, দুঃস্থ মানুষকে সাহায্য করেন সবসময়। এখন করোনাভাইরাসের ভয়াবহতায় মাশরাফি বিন মর্তুজা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। করোনা আক্রান্ত, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছেন শুরু থেকেই।
Advertisement
নিজ নির্বাচনী এলাকায় অসহায় মানুষের জন্য নানারকম সাহায্য সহযোগিতা করেছেন, করেও যাচ্ছেন। তার বাইরে আরও কিছু করা যায় কি না? আরও বেশি করে মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করার চিন্তা তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। আর সে চিন্তা থেকেই নিজের দেড় যুগের সঙ্গী হাতের ব্রেসলেটকে নিলামে দিয়েছেন।
দেশের ক্রিকেটের সবসময়ের সফল ও সেরা অধিনায়ক, মাশরাফির ব্রেসলেট নিলামে বিক্রি হয়েছে ৪২ লাখ টাকায়। যা কিনে নিয়েছে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বিএলএফসিএ। তবে তারা আবার সেটি মাশরাফিকে ফিরিয়ে দেয়া প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।
সেই ৪২ লাখ টাকা দিয়ে কীভাবে করোনায় আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্তদের সেবা করবেন মাশরাফি? তা জানতেও কৌতূহলের কমতি ছিল না। ঈদের আগে তা জানিয়েও দিলেন দেশের ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তি।
Advertisement
শনিবার রাতে তামিম ইকবালের ফেসবুক লাইভে এসে মাশরাফি জনিয়েছেন ব্রেসলেটের নিলামে পাওয়া অর্থ দিয়ে কোথায় কীভাবে সাহায্য করবেন? সঞ্চালক তামিম জানতে চাইলেন, মাশরাফি ভাই আপনার পরিকল্পনা কী? ব্রেসলেট নিলামের অর্থ দিয়ে কীভাবে সাহায্য-সহযোগিতার পরিকল্পনা করেছেন?
মাশরাফি জবাব দিতে গিয়ে প্রথমেই জানিয়ে দিলেন, এরই মধ্যে মাশরাফির নড়াইল ফাউন্ডেশনে টাকাটা জমা পড়েছে। প্রাথমিকভাবে কোন খাতে ঐ সাহায্যের অর্থ দেবেন, তাও মোটামুটি চূড়ান্ত। এর মধ্যে নড়াইলেই মোট অর্থের ৬০ ভাগ সাহায্য করার পক্ষে মাশরাফি।
বাকি অর্থ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে দেয়ার কথা ভাবছেন। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকার ক্রিকেট কোচদের জন্য কিছু করার ইচ্ছেটা প্রবল। এছাড়া আরও কিছু মানবিক কাজ করার পরিচালনাও আছে তার মাথায়।
তাই মুখে এমন কথা, ‘আমি এর মধ্যেই ঠিক করে ফেলেছি কোথায়, কোন খাতে কী পরিমাণ অর্থ দেব। ২৫ লাখ টাকার মত নড়াইলে দেবো। বাকি ১৫ লাখ টাকা বিভিন্ন জায়গার জন্য বরাদ্দ থাকবে। ঢাকার ভেতরে ৮০ জন কোচ আছেন, যারা এখন বেকার। প্র্যাকটিস করাতে পারছেন না। তাদের তালিকা করছি। নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে করবেন, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম কর্মী, নড়াইলের বাইরেও কিভাবে দেয়া যায়, তা নিয়ে কথা বলছি।’
Advertisement
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও কিছু অর্থ সাহায্য দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার, ‘ডাকসুতে গরীব দুঃস্থ শিশু-কিশোরদের লেখাপড়া শেখানো হয়, তাদের সাহায্য সহযোগিতা করার চিন্তাও চূড়ান্ত। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এবং যারা করোনার জন্য প্লাজমা তৈরি করছে, সেখানেও কিছু করার চেষ্টা করছি।’
এগুলো সবই তার প্রাথমিক পরিকল্পনা। সবকিছু নিয়ে একেবারে চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন মাশরাফি, ‘তবে ঠিক টাকার অংক নির্ধারণ করা হয়নি। এর মধ্যে কোন খাতে কী দেবো? এরকম কয়েকটা জায়গা নির্বাচন করেছি। সেটা পরে বসে চূড়ান্ত করব।’
এআরবি/এসএএস/পিআর