সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অধিনায়ক হিসেবেই ২০১১ সালের বিশ্বকাপ খেলার কথা ছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার। ইনজুরির কারণে তা হয়নি। নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। তবু সম্ভাবনা ছিল খেলোয়াড় হিসেবে ঘরের মাঠে হওয়া বিশ্বকাপে অংশ নেয়ার।
Advertisement
তাও হয়নি! ফিটনেসজনিত কারণে মাশরাফিকে রাখা হয়নি ২০১১ সালের বিশ্বকাপের স্কোয়াডে। নিজের ফিটনেসের প্রমাণ দিতে ঘরোয়া ক্রিকেটে সেরাটা নিংড়ে দিয়েছিলেন মাশরাফি। তাও সুযোগ হয়নি বিশ্বকাপ দলে।
তখন এ খবরে মুষড়ে পড়েছিলেন টাইগারদের সফলতম অধিনায়ক। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ খেলতে না পারার আফসোস পোড়াচ্ছিল তাকে। ফিটনেসের প্রমাণ দেয়ার পরেও কেন নেয়া হয়নি মাশরাফিকে, তা এতদিন ছিল এক রহস্য।
সে রহস্যের একটি পর্দা উন্মোচিত হলো শনিবার। তামিম ইকবালের ফেসবুক লাইভে মাশরাফিই জানালেন, তখনকার ফিজিও মাইকেল হেনরির ছোট্ট একটি ভুল কিংবা বেখেয়ালিপনার কারণে সেদিন তৈরি হয়েছিল ভুল বোঝাবুঝির।
Advertisement
অস্ট্রেলিয়া থেকে মাশরাফির শল্যবিদ ডেভিড ইয়াং যে রিপোর্ট পাঠিয়েছিলেন, সেখানে উল্লেখ ছিল মাশরাফি চাইলে খেলতে পারবে, তবে এর দায়ভার তার নিজেরই। কিন্তু এই অংশটা খুলেও দেখেননি হেনরি। রিপোর্টের শুরুর অংশই তিনি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন নির্বাচকদের কাছে। সে কারণে মাশরাফিকে দলে রাখার সাহস পায়নি নির্বাচকরা।
সে ঘটনা মনে করে নড়াইল এক্সপ্রেস বলেছেন, ‘যখন ডেভিড ইয়াং রিপোর্টটা পাঠিয়েছিল আমাদের তখনকার ফিজিও মাইকেল হেনরির কাছে। দূর্ভাগ্যজনকভাবে ও যেটা লিখে পাঠায় তখন পুরো মেইলটা ওর (হেনরি) কাছে আসেনি। মেইলটা যখন আসছে আরও পড়ুন অপশন থাকে সে ঐ অপশনে যায়নি। ও উপরেরটুকু দেখেই ওটা নির্বাচকদের কাছে লিখে পাঠিয়ে দেয়।’
তৎক্ষণাৎ ডেভিড ইয়াংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন মাশরাফি, ‘এরপর আমি ডাক্তারের (ডেভিড ইয়াং) সাথে ফোনে কথা বলি যে, তুমি তো বললা অপশনটা আমার হাতে। আমি খেলতে পারব, তবে খেলতে গিয়ে লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেলে পুরো দায়ভার আমার। সেখানে মেইলে এমন কিছু আসেনি কেন?’
এরপরই জানা যায় এখানে ভুলটা করেছিলেন ফিজিও হেনরি, ‘তখন সে (ইয়াং) বলল নাহ, আমি তো পুরোটাই লিখে পাঠিয়েছি। আমি হেনরিকে বললাম, তুমি মোবাইল চেক করো। পরে আমি যেটা দেখলাম সে (হেনরি) আর নিচের অপশনে যায়নি। এরপর সে আমাকে সরি বলেছে। কিন্তু ওর সাথে তখন আর ঝামেলা করে তো লাভ নাই।’
Advertisement
তবে এতদিন পর এসে আর সে বিশ্বকাপ খেলার আফসোস নেই মাশরাফির। বরং বিশ্বকাপের মঞ্চে না থাকায়, তিনি সময় দিতে পেরেছিলেন পরিবারকে। বিশেষ করে, বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তার গর্ভবতী স্ত্রী সুমনা হক সুমি। ডাক্তাররা বলেছিলেন, মাত্র ৭ মাসে প্রসব করাতে হবে বিধায়, বাঁচানো মুশকিল হয়ে যাবে মাশরাফির স্ত্রীকে।
তবে আল্লাহর রহমতে মা এবং মাশরাফির প্রথম সন্তান হুমায়রা দুজনই সুস্থ্য থাকেন। পুরোটা সময় স্ত্রীর পাশে থাকতে পেরেছিলেন মাশরাফি। বিশ্বকাপ খেলতে থাকলে এটি পারতেন না। তাই বিশ্বকাপে সুযোগ না পাওয়ার ইতিবাচক দিকটাও স্বস্তি-আনন্দ দেয় মাশরাফিকে।
এসএএস/পিআর