রংপুর নগরীর ৩১ নং ওয়ার্ডের মাঝ দিয়ে বয়ে চলা ঘাঘট নদীর ভাঙন থামছেই না। অব্যাহত ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ওই ওয়ার্ডের গাইবান্ধা পাড়ার প্রায় অর্ধ শতাধিক পরিবার। ইতোমধ্যে সব হারিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে ৩০টি পরিবার। দ্রুত ভাঙন রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে পুরো গাইবান্ধাপাড়া।সরেজমিনে ওই এলাকায় দিয়ে দেখা যায়, গত বর্ষা মৌসুমে ঘাঘটের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে তার ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। প্রতিনিয়ত ভাঙন আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছে ৫০টি পরিবার।ওই এলাকার কৃষক সাইফুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, ইতোমধ্যে ১৫/২০ একর জমি কেড়ে নিয়েছে সর্বনাশা ঘাঘট। কৃষক কফিল উদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, গত ঈদের রাতে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার বাড়ি ঘর ভেঙে নদীতে চলে যায়। সব হারিয়ে অন্যের জমিতে বাড়ি করে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি।মুদি দোকান দিয়ে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করে চলছেন ফুলবাবু। তিনি জাগো নিউজকে জানান, বাড়ি ভিটাসহ ৬ শতক জমিই তার ভরসা। ইতোমধ্যে ৪ শতক জমিই চলে গেছে ঘাঘটের পেটে।কৃষক নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, তার ৯৫ শতক জমির মধ্যে ২১ শতক জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এখনি ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে যেটুকু জমি আছে তাও ঘাঘটের গর্ভে চলে যাবে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইতোমধ্যে সব হারিয়ে ৩০টি পরিবার অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। দিনমজুর, কৃষক পরিবারের এসব মানুষেরা বেঁচে থাকার শেষ অবলম্বনটুকু হারিয়ে এখন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।বিএম কলেজের উদ্যোক্তা আকতারুজ্জামান জাগো নিউজকে জানান, ওই এলাকায় কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্যে ৪০ শতক জমি বরাদ্দ করা হয়। ইতোমধ্যে ২০ শতকই ঘাঘট নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে বাকি জমিটুকুও চলে যাওয়া ছাড়াও ওই এলাকার একটি মাদরাসা হুমকির মুখে পড়বে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুর সিটি কর্পোরশেনের মেয়র সরফুদ্দিন আহম্মেদ ঝন্টু জাগো নিউজকে বলেন, সিটি কর্পোরেশেনের প্রয়োজনীয় জনবল ও আর্থিক বরাদ্দ না থাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ভাঙন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবার রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ওই এলাকার ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্ট দফতরে বরাদ্দ চেয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে শুস্ক মৌসুমে কাজ শুরু করা হবে।জিতু কবীর/এসএস/পিআর
Advertisement