বিনোদন

কৃষ্ণপক্ষের কাজ শেষ করবেন রিয়াজ ভাই

জীবন ও মৃত্যুর মালিক নিয়তি। এ নিয়ে কেউ ভবিষ্যত বাণী করতে পারে না। তবে আশার ভেলার দক্ষ মাঝি হিসেবে সবসময়ই মানুষ আশা করতে চায়, বিশ্বাস করতে চায় প্রিয়জনরা থেকে যাবেন আরো অনেকদিন। চিত্রনায়ক রিয়াজের হার্ট অ্যাটাকের ঘটনার পর থেকে চলচ্চিত্রাঙ্গনসহ সারাদেশের মানুষ আশা করছেন তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরবেন। একইভাবে রিয়াজের ফিরে আসার বিশ্বাসী তার সহকর্মী অভিনেতা ও নির্মাতা মাসুদ আখন্দ। উত্তরার হৈ চৈ শুটিং স্পটে গতকাল রাতে যখন রিয়াজ হার্ট অ্যাটাক করলেন তখন পাশে ছিলেন তিনি। নায়ক ফেরদৌসকে নিয়ে তিনিই রিয়াজকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এখানে ধরা পড়ে তার হৃদপিন্ডে চারটি ব্লক। রাতেই একটিতে রিং পরানো হয়। হৃদরোগে আক্রান্ত রিয়াজ অস্ত্রোপচারের আগেও সুস্থ মানুষের মতো কথা বলছিলেন। এখন তিনি আশঙ্কামুক্ত।রিয়াজের অবস্থা বিপদমুক্ত হলে তিনি নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন রিয়াজের অসুস্থ হওয়া থেকে শুরু করে হাসপাতালে নিয়ে আসার অভিজ্ঞতা। মাসুদ আখন্দ লিখেছেন, ‘কৃষ্ণপক্ষের সেটে বসে গল্প করছি পরিচালক মেহের আফরোজ শাওন এবং অভিনেতা ফেরদৌস ভাইয়ের সাথে। সেট রেডি অভিনেতা রিয়াজ ভাই ও মাহিয়া মাহি সেটে এলেই শুটিং শুরু হবে। এর মধ্যে একজন এসে জানালো রিয়াজ ভাই অসুস্থ এবং বমি করছেন। আমরা তিনজনেই দৌড়ে দোতলায় গেলাম।দোতলায় একটা খাটে তিনি শুয়ে আছেন। আমরা জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বললেন একটু খারাপ লাগছে, ঠিক হয়ে গেলেই শুটিং করবো। ফেরদৌস ভাই রিয়াজ ভাইয়ের গায়ে হাত দিয়ে দেখে বললেন, শরীর এতো ঠাণ্ডা কেন? এক্ষুনি হাসপাতালে নিতে হবে। আমি স্পর্শ করে দেখি ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানির বোতলের মতো তার শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আছে কিন্তু তিনি অনবরত ঘামছেন।আমি আর ফেরদৌস ভাই ধরে রিয়াজ ভাইকে দ্রুত নিচে নামালাম এবং উত্তরা হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পরে এম্বুলান্সে করে এপোলো হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। ডাক্তার বললেন যে আপনারা সঠিক সময়ে উনাকে নিয়ে এসে খুব ভালো করেছেন। এমন সময় রিয়াজ ভাই পরিচালককে বললেন, ‘শাওন আপনার শুটিং আছে, আপনি যান। আমি ঠিক হয়ে যাবো।’পরিচালক কিছু না বলে বাইরে এসে ঢক ঢক করে অনেকটা পানি খেলেন। আমি প্রশ্ন করি, গুরুপত্নি ভয় পেয়েছেন? তিনি দিশেহারা দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকান। আমি নির্ভয়ের হাসি দেয়ার চেষ্টা করি। ওই যে দেখা যায় ফেরদৌস ভাই রিয়াজ ভাইকে ছায়ার মত আগলে আছেন।রিয়াজ ভাইকে রেখে আমি যখন হাসপাতাল থেকে বেরিয়েছি তখন রিয়াজ ভাইকে একটি রিং পড়ানো হয়েছে। যতটুকু বুঝেছি তিনি বিপদ মুক্ত।সিসিইউ এর সামনে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির যত শিল্পী কলাকুশলী খবর পেয়েছেন সবাই চলে এসেছেন। রিয়াজ ভাইয়ের জনপ্রিয়তা সেটা অনেকের চোখের জল আমাকে বলে দিচ্ছিল প্রচণ্ড ভাবে। দেশের বাইরে থেকে এই জনপ্রিয়তা ঠিক ভাবে বোঝা যায় না।আমার বিশ্বাস রিয়াজ ভাই খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে কৃষ্ণপক্ষের কাজ শেষ করবেন ইনশাল্লাহ।এই লেখাটি কিছু অদ্ভুত অদ্ভুত আজগুবি নিউজ দেখে লিখলাম। না জেনে আজগুবি কথা গুলো কেন পত্রিকা লিখছে আমি বুঝতে পারছি না। বাংলাদেশের মানুষগুলোই বুঝি এমনই অদ্ভুত। এম্বুলান্সের ড্রাইভার উত্তরা থেকে বসুন্ধরা যাওয়ার পথে আমার সাথে অভিনেতা মান্নার মৃত্যু কাহিনী বর্ণনা শুরু করলো। এবং এর সাথে রিয়াজ ভাইয়ের বর্তমান ঘটনার কতটুকু মিল সেটা বুঝাচ্ছিল কারন একই ড্রাইভার অভিনেতা মান্নার সময়েও ছিলেন।আমি আহত কণ্ঠে বললাম, ভাই আপনার কি মাথা খারাপ? কি সময়ে কিসের গল্প শুরু করলেন? গাড়ি চালান। সে আমাকে বলে, সরি স্যার সরি। আসলে রিয়াজ ভাইকে এমন অবস্থায় দেখে আউলা হয়ে গেছি। তিনি আমার খুব প্রিয় একজন নায়ক।আমি হতভম্ব হয়ে বাঙালি দেখি। সাংবাদিক থেকে এম্বুলান্সের ড্রাইভার সবার মাথাই আউলা হয়ে গেছে!এলএ/পিআর

Advertisement