চলছে ২৯ রমজান। অনেকেই ঈদের আনন্দ ও খুশির প্রস্তুতিতে শেষ দশকের শেষ সময়টিকে ভুলে যায়। অথচ শেষ রমজানের রাতের তারাবিহ, তাহাজ্জুদ এবং সাহরি ও শেষ রোজায় রয়েছে অফুরন্ত রহমত। তা ঈদের রাতসহ ঈদুল ফিতরের নামাজের পূর্ব পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
Advertisement
শেষ সময়ের এ রাত ও দিনগুলোর ফজিলত মর্যাদা সৌভাগ্যও কম নয়। ঈদের খুশি ও প্রস্তুতিতে শেষ তারাবিহ, তাহাজ্জুদ ও রমজানের রহমত বরকত আর অফুরন্ত সৌভাগ্যগুলো কোনোভাবেই হাতছাড়া করা ঠিক হবে না।
ইতিমধ্যে খতম তারাবিহ সম্পন্ন হয়েছে। যারা তারাবিহতে কুরআন খতম সম্পন্ন করেছেন এটা তাদের জন্য মহান আল্লাহর অনুগ্রহ। যারা তা করতে পারেনি কিন্তু তারাবিহ তাহাজ্জুদ ও সাহরি গ্রহণ করেছে, এগুলোও তাদের জন্য মহাঅনুগ্রহ। এ অনুগ্রহ যেন শাওয়ালের চাঁদ দেখা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
রমজানের রোজা রেখে, তারাবিহ, তাহাজ্জুদের তেলাওয়াতে মানুষতো শুধু জিহ্বা নাড়ানো ছাড়া কিছু নয়। কারণ কুরআন নাজিলের মাসে রোজাদার ইবাদতকারী এ তেলাওয়াত মূলত আল্লাহর পক্ষ থেকেই হয়ে থাকে। রোজাদারের জন্য এটা অনেক বড় রহমত ও অনুগ্রহ।
Advertisement
যদি মুমিন মুসলমান শেষ রমজানের রোজা পালন, তারাবিহ ও তাহাজ্জুদের ইবাদত থেকে বিরত থাকে তবে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি হাদিসের ওপর আমল ছুটে যাবে। কেননা হাদিসে এসেছে-- হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সঙ্গে সাওয়াব লাভের আশায় রমজানের রোজা রাখে, তার বিগত জীবনের গোনাহগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে।' (বুখারি, মুসলিম)
- হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সঙ্গে সাওয়াব লাভের আশায় রমজানের রাতের নামাজ (তারাবিহ) পড়ে, তার বিগত জীবনের গোনাহগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে।' (বুখারি, মুসলিম)
- হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সঙ্গে সাওয়াব লাভের আশায় রমজানে লাইলাতুল কদরে নামাজ পড়ে, তার বিগত জীবনের গোনাহগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে।' (বুখারি, মুসলিম)
রমজানের শেষ দশকের শেষ সময়ে রোজা পালন, তারাবিহ, তাহাজ্জুদসহ যাবতীয় ইবাদত-বন্দেগিই অন্তর্ভূক্ত। সুতরাং কোনো রোজাদারেরই উচিত নয়, শেষ সময়ের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো ঈদের প্রস্তুতি কিংবা অবহেলায় তা থেকে বিরত থাকা। কেননা হতে পারে রমাজনের শেষ সময়ের এ ইবাদত-বন্দেগিই মুমিন মুসলমানের জন্য রমজানের সেরা অনুগ্রহ।
Advertisement
শুধু তাই নয়, শাওয়ালের চাঁদ দেখার পর ঈদের রাতের ইবাদত-বন্দেগির মর্যাদাও কম নয়। এ রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতি অনুগ্রহে ভাণ্ডার খুলে দেন। রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত দান করেন। অথচ এ রাতে মানুষ উৎসব ও আনন্দের মোহে বিনা ইবাদত-বন্দেগিতে কাটিয়ে দেয়। কোনো মুমিন মুসলমান রোজাদারের যেন এ ভুলটি না হয়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঈদের নামাজ আদায় করার আগ পর্যন্ত রমজানের শেষ সময়ের প্রতিটি মুহূর্ত ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করে তার রহমত বরকত মাগফেরাত নাজাত লাভের তাওফিক দান করুন। বিগত জীবনের গোনাহ থেমে মুক্তি দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর