করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দলবেঁধে বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে ঈদের কেনাকাটা করছে মানুষ। ঈদ মার্কেটে মানুষের ঢল দেখে যে কারও মনে হবে দেশে করোনা নামে কিছুই নেই।
Advertisement
শুক্রবার (২২ মে) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত গাইবান্ধার বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গাইবান্ধার সবগুলো মার্কেট খোলা রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। মার্কেট খোলার পরই হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে গাইবান্ধা শহরে।
অথচ শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৪ জন মারা গেছেন। এটি একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ৪৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ৬৯৪ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩০ হাজার ২০৫ জনে।
এ অবস্থার মধ্যেই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত গাইবান্ধা শহরের সালিমার সুপার মার্কেট, ইসলাম প্লাজা, তালুকদার মার্কেটসহ বড় বড় মার্কেটগুলো খোলা রাখা হয়। জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এসব মার্কেট খোলা হয়েছে। দুপুরে মার্কেটগুলোতে মানুষের ঢল নামে। স্বাস্থ্যবিধি মানা তো দূরের কথা; গায়ে গা লাগিয়ে কেনাকাটা করেছেন সবাই। এতে বেড়ে গেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি।
Advertisement
এর আগে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেচাকেনার শর্তে ব্যবসায়ীদের মার্কেট খোলার সিদ্ধান্ত দেয় জেলা প্রশাসন। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করায় গত সোমবার (১৮ মে) থেকে সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান, কাপড়ের দোকান ও সব মার্কেট বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন। কিন্তু জেলা প্রশাসনের সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মার্কেট খুলেছেন ব্যবসায়ীরা।
মার্কেট খোলা রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে জুতা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বাবু মিয়া বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বৈঠকের পর তার মৌখিক নির্দেশে আবারও মার্কেট খুলেছি আমরা।
গাইবান্ধা জেলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাকছুদার রহমান শাহান বলেন, গণবিজ্ঞপ্তি জারির পর দোকানের কর্মচারীদের বেতন-বোনাসের দাবির মুখে দোকান খোলার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে মৌখিক আবেদন জানাই। জেলা প্রশাসক আমাদের আবেদন শোনার পর কোনো মন্তব্য করেননি। পরে নিজেরাই দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নিই।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরহাদ আব্দুল্যাহ হারুন বাবলু বলেন, সব মার্কেট বন্ধ রাখতে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন জেলা প্রশাসক। মাইকিং করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এরপরও ব্যবসায়ীরা কেন মার্কেট খুললেন তা আমার জানা নেই। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে আমি হতাশ।
Advertisement
এ বিষয়ে জানতে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আব্দুল মতিনকে বার বার কল দিলেও রিসিভ করেননি তিনি।
জাহিদ খন্দকার/এএম/পিআর