'প্রিয় দেশবাসী আপনাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে বলতে চাই, বর্তমান পরিস্থিতি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধাবস্থা, এই যুদ্ধ অবস্থায় প্রত্যেককে যোদ্ধার মানসিকতা ধারণ করুন, লড়াইয়ের মানসিকতা ধারণ করুন। যে যেখানে আছেন, সেখানেই অবস্থান করুন। শহর থেকে গ্রামের দিকে যাবেন না। যে প্রিয় আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য আপনি শহর ছেড়ে গ্রামে যেতে চাচ্ছেন, আপনার কারণে আপনার সেই প্রিয়জন যেন ঝুঁকিতে না পড়ে যায়।'
Advertisement
এ বক্তব্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন ও বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক) অধ্যাপক ডাক্তার নাসিমা সুলতানার।
শুক্রবার (২২ মে) করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত হেলথ বুলেটিনেরর শুরুতেই তিনি দেশের মানুষকে সতর্ক করে ঘরে থাকার পরামর্শ দেন। এ কাজটি তিনি প্রতিদিনই করে থাকেন। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। আজ আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ রেকর্ডসংখ্যক ২৪ জনের মৃত্যু হয়।
দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ঘরে থাকার নির্দেশনা ও পরামর্শ দিলেও কে শোনে কার কথা। সীমিত পরিসরে খোলা থাকা রাজধানীর বিভিন্ন শপিং মার্কেট ও ফুটপাতে তাকালে বরং উল্টো চিত্র দেখা যায়।
Advertisement
শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা থাকলেও ঈদকে সামনে রেখে ঈদের শপিংয়ে আসা মানুষগুলোর তা মানার কোনো বালাই নেই। আজ ২৮ রোজা শেষ হচ্ছে। আগামীকাল (২৩ মে) বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনে চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক বসবে। সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা গেলে এবার রোজা হবে ২৯টি এবং রোববার পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হবে। আর চাঁদ দেখা না গেলে ৩০টি রোজা শেষে আগামী সোমবার ঈদ উদযাপিত হবে।
অন্যান্য বছর এই সময়ে রাজধানীসহ সারাদেশে ঈদ শপিংয়ে হাজার হাজার মানুষ ব্যস্ত থাকলেও এবার করোনা সংক্রমণজনিত ঝুঁকির কারণে অধিকাংশ শপিংমল, মার্কেট বন্ধ রয়েছে। সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেসব মার্কেট খোলা রয়েছে, সেগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি কতটুকু পালিত হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে ফুটপাত ও রাস্তায় অপ্রশস্ত দোকানগুলোতে কিছুতেই স্বাস্থ্যবিধি বা শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব হচ্ছে না।
শুক্রবার সরেজমিন নিউমার্কেট, ঢাকা কলেজ, সাইন্স ল্যাবরেটরি, এলিফ্যান্ট রোড, বাটা সিগনাল, জিগাতলাও ধানমন্ডি এলাকায় দেখা গেছে, বিভিন্ন মার্কেটে ক্রেতাদের বেশ ভিড়। বিশেষ করে ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভিড় তুলনামূলকভাবে বেশি।
মার্কেট ছাড়াও আজ থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে ঢাকার বাইরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে সরকার। এ কারণে আজ ঈদ শপিংয়ের জন্য মার্কেটগুলোতে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। আজ থেকেই অসংখ্য মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ি করে কিংবা গাড়িভাড়া করে ঢাকার বাইরে রওনা হচ্ছেন। গতকাল পর্যন্ত ঢাকার বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান কঠোর থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে গণপরিবহন ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়িতে ঢাকার বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়। এর ফলে ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
Advertisement
এমইউ/জেডএ/পিআর