জাতীয়

অধ্যাদেশ জারি : করোনায় আয়কর-ভ্যাট রিটার্ন না দিলেও শাস্তি মওকুফ

করোনাভাইরাসের মতো মহামারিতে সময়মতো আয়কর ও মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) রিটার্ন দাখিল করতে না পারলেও জরিমানা ও সুদ আরোপে মতো শাস্তি পেতে হবে না। এজন্য ‘ইনকাম ট্যাক্স (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২০’ ও ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২০’ জারি করেছে সরকার।

Advertisement

এর আগে গত ৭ মে মন্ত্রিসভা বৈঠকে অধ্যাদেশ দুটি অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। বুধবার (২০ মে) আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে রাষ্ট্রপতির আদেশে এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইনের একটা বিধান অনুযায়ী, প্রত্যেক মাসের রিটার্ন পরের মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে জমা দিতে হয়। কিন্তু চলমান করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে ব্যবস্থা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত বন্ধ থাকার ফলে এই বিধান অনুসরণ করা সম্ভব হয়নি।

আইনে বিধান আছে, যদি ১৫ তারিখের মধ্যে রিটার্ন দাখিল না করা হয় তাহলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও প্রতি একদিনের জন্য দুই শতাংশ করে সুদ দিতে হবে।

Advertisement

অপরদিকে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে সাধারণ ছুটি ঘোষিত হওয়ায় গত ২৬ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত আয়কর বিভাগের সকল দাফতরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে ইতোমধ্যে করদাতারা এবং আয়কর কর্তৃপক্ষও ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশের কতিপয় ধারার বিধান অনুযায়ী কার্যক্রম পরিপালন ও গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এই ব্যর্থতার কারণে করদাতাদের ওপর জরিমানা ও সুদ আরোপ এবং আয়কর কর্তৃপক্ষের ক্ষেত্রে সময় অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে রাজস্বহানির দায় আরোপের আইনগত সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট দুটি আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু সংসদ অধিবেশন না থাকায় তা অধ্যাদেশ আকারে জারি সিদ্ধান্ত হয়।

সংশোধিত আয়কর অধ্যাদেশে জরিমানা ও সুদ এবং দায় আরোপের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পক্ষের কোনো ধরনের ব্যক্তিগত সংশ্লেষ বা অবহেলা না থাকায় শুধু উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে এই ধরনের আইনগত দায় সৃষ্টি হওয়ায় তা মওকুফের জন্য করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন ‘এপিডেমিক’, ‘পেনডেমিক’, ‘ওয়ার অ্যান্ড এনি আদার অ্যাক্ট অব গড’ উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-তে একটি নতুন ধারা ১৮৪জি সংযোজন করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

সংশোধন অনুযায়ী ‘আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪’ এর যেসব ধারার বিধান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিপালন করতে হবে, সেসব ধারার বিধান পূরণে ওই সময় পরিগণনার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত ধারা অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মহামারিজনিত বা অন্য কোনো নিয়ন্ত্রণ-বহির্ভূত সময় বাদ দিতে বা প্রমার্জন করতে বা প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে পরিপালনের জন্য সময় বর্ধিত করতে পারবে।

অপরদিকে সংশোধিত ইনকাম ট্যাক্স অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি, দৈব-দুর্বিপাক, যুদ্ধের কারণে জনস্বার্থে বোর্ড (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) সরকারের অনুমোদন নিয়ে আদেশ দ্বারা এমন আপদকালীন সময়ের জন্য সুদ ও জরিমানা আদায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করে দাখিলপত্র পেশের সময়সীমা বাড়াতে পারবে।

Advertisement

আরএমএম/এসআর/জেআইএম